অধীর অপেক্ষা, মাত্র ৮৫ সেকেন্ডে প্রেস ব্রিফিং শেষ
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ২৫ মিনিট। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হলো—দুপুর ১২টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার বাইরে প্রেস ব্রিফিং হবে। খবর পাওয়া মাত্র গণমাধ্যমকর্মীরা তড়িঘড়ি করে যমুনার পথে রওয়ানা দিলেন। নানান কারণে আজকের ব্রিফিংটি গণমাধ্যমে কাজ করা সবার কাছে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছিল। কারণও ছিল বেশ কিছু—রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে মুমূর্ষ অবস্থায় থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সরকারের অবস্থান, হঠাৎ করে ১ ডিসেম্বর তাকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি)’ ঘোষণা ও নিরাপত্তায় এসএসএফ মোতায়েন, তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে সরকারের কোনো নতুন ব্যাখ্যা আছে কি না—এসব প্রশ্নের উত্তর জানতেই সাংবাদিকরা নির্ধারিত সময়ের আগেই ব্রিফিং স্পটে জড়ো হন। অপেক্ষার ফাঁকে সাংবাদিকদের মধ্যে শুরু হয় নানান আলোচনা। কেউ বলেন, ‘তারেক জিয়া নাকি লন্ডন ছাড়ছেন।’ কেউ আবার খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন—‘উনি কি আর সুস্থ হবেন?’ আবার কেউ প্রশ্ন তোলেন—‘উনার (খালেদা জিয়া) কিছু হলে দলের নেতৃত্ব কার হাতে যাবে?’ পৌষের মিষ্টি রোদে সবুজ বৃক্ষছায়াশোভিত যমুনার বাই
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ২৫ মিনিট। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হলো—দুপুর ১২টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার বাইরে প্রেস ব্রিফিং হবে। খবর পাওয়া মাত্র গণমাধ্যমকর্মীরা তড়িঘড়ি করে যমুনার পথে রওয়ানা দিলেন। নানান কারণে আজকের ব্রিফিংটি গণমাধ্যমে কাজ করা সবার কাছে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছিল।
কারণও ছিল বেশ কিছু—রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে মুমূর্ষ অবস্থায় থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সরকারের অবস্থান, হঠাৎ করে ১ ডিসেম্বর তাকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি)’ ঘোষণা ও নিরাপত্তায় এসএসএফ মোতায়েন, তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে সরকারের কোনো নতুন ব্যাখ্যা আছে কি না—এসব প্রশ্নের উত্তর জানতেই সাংবাদিকরা নির্ধারিত সময়ের আগেই ব্রিফিং স্পটে জড়ো হন।
অপেক্ষার ফাঁকে সাংবাদিকদের মধ্যে শুরু হয় নানান আলোচনা। কেউ বলেন, ‘তারেক জিয়া নাকি লন্ডন ছাড়ছেন।’ কেউ আবার খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন—‘উনি কি আর সুস্থ হবেন?’ আবার কেউ প্রশ্ন তোলেন—‘উনার (খালেদা জিয়া) কিছু হলে দলের নেতৃত্ব কার হাতে যাবে?’
পৌষের মিষ্টি রোদে সবুজ বৃক্ষছায়াশোভিত যমুনার বাইরে সাংবাদিকরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকেন। দুপুর ১২টা পেরিয়ে ১২টা ৪৫—তবুও শুরু হলো না ব্রিফিং। কেউ একজন প্রেস উইংয়ে ফোন করে জানতে পারেন—ব্রিফিং দুপুর ১২টার পরের কোনো সময়ে হবে।
তখন ভেতরে চলছে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক—প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে। দুপুর ১টার দিকে কয়েকজন উপদেষ্টার গাড়ি যমুনা ত্যাগ করলে সাংবাদিকদের মধ্যে আবার আলোড়ন ওঠে। কিছুক্ষণ পরে এসে উপস্থিত হন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ। তারা জানান, পরিকল্পনা উপদেষ্টা শিগগির এসে সরকারের একটি সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন। তবে আজ কোনো প্রশ্ন নেওয়া হবে না। এ ঘোষণা শুনেই দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষারত সাংবাদিকদের মুখে স্পষ্ট হতাশা।
অল্পক্ষণ পর ব্রিফিংস্থলে উপস্থিত হন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা লিখিত বিবৃতি পড়ে শোনান। তিনি জানান, মঙ্গলবার যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভায় তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সাবেক রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা করে দোয়া করা হয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি বিবেচনায় হাসপাতালে নির্বিঘ্ন চিকিৎসা, প্রয়োজনে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার পরিকল্পনা, নিরাপত্তা ও যাতায়াতের সুবিধা নিশ্চিত করতে তাকে রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে তাৎক্ষণিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি পরিবার ও দলকে জানানো হয়েছে। বিবৃতি পড়া শেষ হতেই উপদেষ্টারা ব্রিফিংস্থল ত্যাগ করেন। পুরো ব্রিফিংয়ের সময় মাত্র ১ মিনিট ২৫ সেকেন্ড।
সাংবাদিকদের মধ্যে তখন প্রতিধ্বনিত হয় হতাশার উক্তি—‘বিবৃতির ভাষায় মূল সিদ্ধান্ত থাকলেও, আমাদের জানা দরকার ছিল আরও অনেক কিছু… কিন্তু প্রশ্ন করার সুযোগই পাওয়া গেলো না।’
এমইউ/এমএমকে/জেআইএম
What's Your Reaction?