অপরিকল্পিত বেড়িবাঁধে খোলা আকাশের নিচে দুই শতাধিক পরিবার
ভোলার তজুমদ্দিনে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের খামখেয়ালি এবং অপরিল্পিত বেড়িবাঁধ নির্মাণের ফলে মেঘনা নদীর তীরে গৃহহীন হয়ে পড়েছে উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের কয়েক গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক পরিবার। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) উপজেলার দালালকান্দি, মাওলানাকান্দিসহ গ্রামবাসীর আয়োজনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বক্তারা বলেন, বেড়িবাঁধের কাজ পশ্চিম পাশ দিয়ে না করে পূর্ব পাশ দিয়ে করলে আমাদের ঘরগুলো ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেত। তারা আরেকটু পূর্বপাশে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান। এ বাঁধ নির্মাণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো গৃহহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীরা। সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ৭৪ কোটি ১৭ লাখ ৩৬ হাজার ৪৫৭ টাকা ব্যায়ে উপকূলীয় বাঁধ পুনর্বাসন ও নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন জীবনমান প্রকল্পের আওতায় দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স গোলাম রব্বানী কনাস্ট্রাকশন। কাজটি শেষ হবে ২০২৬ সালের জুন মাসে। সেই অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বেড়িবাঁধে মাটি খননের কাজ শুরু করেন ২০২৫ সালের নভেম্বর মাসে। অপরিকল্পিতভাবে খননের কাজ শুরু করার ফলে দুই শতাধিক বসতঘর, ফসলি
ভোলার তজুমদ্দিনে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের খামখেয়ালি এবং অপরিল্পিত বেড়িবাঁধ নির্মাণের ফলে মেঘনা নদীর তীরে গৃহহীন হয়ে পড়েছে উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের কয়েক গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক পরিবার।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) উপজেলার দালালকান্দি, মাওলানাকান্দিসহ গ্রামবাসীর আয়োজনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় বক্তারা বলেন, বেড়িবাঁধের কাজ পশ্চিম পাশ দিয়ে না করে পূর্ব পাশ দিয়ে করলে আমাদের ঘরগুলো ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেত। তারা আরেকটু পূর্বপাশে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান। এ বাঁধ নির্মাণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো গৃহহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীরা।
সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ৭৪ কোটি ১৭ লাখ ৩৬ হাজার ৪৫৭ টাকা ব্যায়ে উপকূলীয় বাঁধ পুনর্বাসন ও নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন জীবনমান প্রকল্পের আওতায় দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স গোলাম রব্বানী কনাস্ট্রাকশন। কাজটি শেষ হবে ২০২৬ সালের জুন মাসে। সেই অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বেড়িবাঁধে মাটি খননের কাজ শুরু করেন ২০২৫ সালের নভেম্বর মাসে।
অপরিকল্পিতভাবে খননের কাজ শুরু করার ফলে দুই শতাধিক বসতঘর, ফসলি জমি ও সুপারি বাগানসহ বিভিন্ন ধরনের গাছপালা কেটে নষ্ট করলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ না দিয়ে ক্ষমতার জোরে বেড়িবাঁধের কাজ বাস্তবায়ন করার চেষ্টা চালায়। পরে ভুক্তভোগীরা একত্রিত হয়ে গত শুক্রবার সকালে বেড়িবাঁধের মাটি খননের কাজ বন্ধ করে দেয়।
ক্ষতিগ্রস্তরা বেড়িবাঁধটি বর্তমান অবস্থান থেকে ৫-১০ ফুট পূর্বদিকে নিতে অথবা তাদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দাবি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স গোলাম রব্বানী কনাস্ট্রাকশন এর আগে যে সব বাড়িঘর ভেঙে মাটি কাটার কাজ করেছে সেসব ঘর মালিক গরিব, অসহায় ভূমিহীন পরিবারগুলো বর্তমানে কনকনে শীতের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। পরিবারগুলো ভূমিহীন এবং গরিব হওয়ার ফলে খোলা আকাশই তাদের একমাত্র ভরসা।
ভুক্তভোগীরা জানান, ঠিকাদারের লোকজন আমাদের ১৫ হাজার করে টাকা দেওয়ার চেষ্টা করেন কিন্তু আমরা তা গ্রহণ করিনি। হয় আমাদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, অথবা পূর্বদিকে অনেক জায়গা আছে- সেদিকে সরিয়ে দিলে আমার শেষ সম্বল ঘর ভিটাটুকু রক্ষা হবে। আর তাতেই আমরা আমাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকতে পারব।
জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডি এসএসডিও আহসান আহমেদ বলেন, জমির মালিকদের সঙ্গে কথা বলে সমঝতার মাধ্যমে বন্ধ কাজ শুরু করা হবে। বেড়িবাঁধের জমি অধিগ্রহণ করতে সরকারি কোনো বরাদ্দ না থাকায় ঘর ও জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সুযোগ নেই। তবুও ঘর মালিকরা কোথাও অস্থায়ীভাবে থাকলে বেড়িবাঁধ সম্পন্ন হলে আবার বেড়িবাঁধে থাকতে পারবে।
তজুমদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, এলাকাবাসীর একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। গতকাল এলাকাবাসী, পাউবো ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কিছুই বলতে পারব না।
What's Your Reaction?