ভারতের মণিপুরে দুইজন মন্ত্রী ও তিনজন বিধায়কের বাড়িতে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। জিরিবাম জেলায় অপহৃত নারী-শিশুদের হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার (১৬ নভেম্বর) এই হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে ইম্ফল পশ্চিম জেলার প্রশাসন। একইসঙ্গে ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব, বিষ্ণুপুর, থৌবাল, কাকচিং, কাংপোকপি ও চূড়াচাঁদপুর জেলায় দুইদিনের জন্য ইন্টারনেট ও মোবাইল ডেটা সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন>>
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার ইম্ফলের লামফেল সানাকেইথেল এলাকায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী সাপাম রঞ্জনের বাড়িতে বিক্ষোভকারীরা হামলা চালায়। এছাড়া, সাগলবন্দ এলাকায় বিজেপি বিধায়ক আরকে ইমোর বাড়ির সামনে বিক্ষুব্ধ জনতা জড়ো হয়ে স্লোগান দেয়। আরকে ইমো মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের জামাতা।
এদিন কেইশামথং এলাকার স্বতন্ত্র বিধায়ক সাপাম নিশিকান্ত সিংয়ের বাড়িতেও বিক্ষোভকারীরা প্রবেশ করে। তবে তাকে বাড়িতে না পেয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা তার মালিকানাধীন স্থানীয় একটি সংবাদপত্রের অফিসে হামলা চালায়।
এর আগে, শুক্রবার রাতে মণিপুর-আসাম সীমান্তে জিরি ও বারাক নদীর সংযোগস্থল থেকে তিনটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়, যা নিখোঁজ ছয়জনের মধ্যে তিনজনের বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্রের বরাতে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে দুই শিশু ও একজন নারী রয়েছেন।
এরপর শনিবার দুপুরে আরও তিনটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ফলে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ছয়জনে। তবে পরের তিনজনের পরিচয় এখনো শনাক্ত করা হয়নি।
গত ১১ নভেম্বর জিরিবাম জেলার বোকোবেরা এলাকায় একদল কুকি সন্ত্রাসী বেশ কয়েকজন নারী ও শিশুকে অপহরণ করেছিল। সেই সময় আরেকটি কুকি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) সংঘর্ষ হয়, যেখানে ১০ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়। তবে কুকি সম্প্রদায় দাবি করেছে, নিহতরা ‘গ্রাম স্বেচ্ছাসেবক’ ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মণিপুরে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু মেইতেই এবং প্রধানত খ্রিস্টান কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। এই সংঘাতের ফলে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে আগের সহাবস্থান ভেস্তে গেছে এবং রাজ্যজুড়ে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে।
সূত্র: এনডিটিভি
কেএএ/