ঠাকুরগাঁও শহরের মাম হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গলব্লাডার অপারেশনের পর জ্ঞান ফিরেনি, টানা ৫ দিন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন খায়রুল ইসলাম (৫০) নামে এক রোগী মারা গেছেন। চিকিৎসায় অবহেলায় জড়িত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের বিচার দাবি করেছেন রোগীর স্বজন ও প্রতিবেশীরা।
বুধবার (২৬ আগস্ট) ভোরে দিনাজপুর মেডিকেলে মারা যান তিনি।
খায়রুল ইসলাম সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের পাইকপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
রোগীর স্বজনরা জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে ঠাকুরগাঁও শহরের মাম হাসপাতালে ডা. রুহুল কুদ্দুস ও ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেস্থেসিয়া) ডা. আলিরেজা আল বুরানীর কাছে গলব্লাডারের অপারেশন করেন খায়রুল ইসলাম। অপারেশনের পর ৯ ঘণ্টা জ্ঞান না ফেরায় স্বজনরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জবাব চাইতে গেলে কৌশলে দিনাজপুর মেডিকেলে রোগীকে পাঠিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেখানে ৫ দিন আইসিইউতে থাকার পর বুধবার রোগী মারা যান।
রোগীর মেয়ে খুরশিদা জাহান খুশবু অভিযোগ করে বলেন, গলব্লাডার অপারেশন করতে সময় লাগে ২০-২৫ মিনিট। আমার বাবার সময় লেগেছে ঘণ্টার উপর। এরপরে আর জ্ঞান ফিরেনি। পরের দিন সকাল পর্যন্ত বাবার জ্ঞান না ফেরায় একাধিকবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করার পরও তারা কোনো কিছু হয়নি বলে এড়িয়ে গেছে। ঘুমের ওষুধ বেশি হয়ে গেছে বলে তাদের সান্ত্বনা দেওয়া হয়।
খুশবু আরও অভিযোগ করেন, চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় আমার বাবাকে হারিয়েছি। আমি হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের ছাড়ব না।
মাম হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার সফিউল আলম ভুট্টু বলেন, অপারেশনের পর রোগীর পরবর্তী অবস্থা সন্তোষজনক ছিল না। চিকিৎসক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর এখানে আইসিইউ সুবিধা না থাকায় দিনাজপুর মেডিকেলে পাঠান। রোগীর চিকিৎসায় তাদের কোনো অবহেলা ছিল না বলে দাবি করেন ম্যানেজার।
এদিকে জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেস্থেসিয়া) ডা. আলিরেজা আলবুরানী বলেন, আমাদের দিক থেকে কোনো অবহেলা ছিল না। অপারেশনের পর আমরা পর্যবেক্ষণে রেখেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করেই রোগীর পটাশিয়াম বেড়ে যাওয়ায় দিনাজপুরে পাঠানো হয়।
যদিও এর আগে রেফার্ড করার দিন মাম হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার সফিউল আলম ভুট্টু এবং ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেস্থেসিয়া) ডা. আলিরেজা আলবুরানী দাবি করেছিলেন রোগীর কোনো সমস্যা হবে না।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি সারোয়ারে আলম খান কালবেলাকে বলেন, এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।