অবিলম্বে কার্যকর ও স্বাধীন তথ্য কমিশন গঠনের দাবি টিআইবির

1 hour ago 5

অবিলম্বে একটি কার্যকর ও স্বাধীন তথ্য কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস উপলক্ষে এক বিবৃতিতে এই দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি। দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তথ্য কমিশন গঠন না হওয়ায় সংস্থাটি তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এই বিবৃতি দিয়েছে টিআইবি।

বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও তথ্য কমিশন গঠন ও তথ্য অধিকার আইন সংস্কারের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তথ্য জানার অধিকার রক্ষায় সরকারের এ উদাসীনতা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, যা এই সরকারের বড় একটি ব্যর্থতা হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কমিশন না থাকায় নাগরিকদের তথ্য সংক্রান্ত আবেদন ও অভিযোগের কোনো শুনানি হচ্ছে না, ফলে তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার বাস্তবায়ন একপ্রকার থমকে আছে। তথ্য কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ও তথ্য অধিকার সম্পর্কিত অন্যান্য কার্যক্রমও স্থবির হয়ে পড়েছে, যা সরকারি প্রতিষ্ঠানে তথ্য গোপনের সংস্কৃতিকে আরও দৃঢ় করছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ পাসের মধ্য দিয়ে একটি স্বাধীন সংস্থা হিসেবে তথ্য কমিশনের যাত্রা শুরু হলেও, কর্তৃত্ববাদী সরকারের সদিচ্ছার অভাবের কারণে আইনটির কার্যকর বাস্তবায়ন হয়নি। অতীতে যেসব তথ্য কমিশনার দায়িত্বে ছিলেন, তাদের অনেকেই দলীয় আনুগত্যের কারণে কমিশনের নিরপেক্ষতা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

বিবৃতিতে টিআইবি আরও জানায়, তথ্য অধিকারকে বাস্তবায়নের জন্য আইন ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয় আমূল সংস্কার প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে সংস্থাটি ১৫ দফা সুপারিশ উত্থাপন করেছে।

টিআইবির উল্লেখযোগ্য সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে

তথ্য অধিকার আইনকে যুগোপযোগী করতে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে আইনের বিভিন্ন ধারা সংস্কার; রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানকে আইনের আওতায় আনা; রাজনৈতিক দলগুলোর আয়-ব্যয়ের হিসাব জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা ও নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে তা প্রকাশ নিশ্চিত করা; বাকস্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে তথ্য অধিকার আইনকে শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে কার্যকর বাস্তবায়ন; জনগণের ওপর নজরদারি বৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত নিবর্তনমূলক আইনের অপব্যবহার বন্ধ করা; তথ্যপ্রকাশে ডিজিটাল টুলস সহজলভ্য করা এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন।

টিআইবি মনে করে, জনগণের তথ্য জানার অধিকার নিশ্চিত করতে হলে একটি সক্রিয়, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তথ্য কমিশনের বিকল্প নেই। এজন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে উপযুক্ত ও স্বার্থের দ্বন্দ্বমুক্ত ব্যক্তিদের কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দিয়ে তথ্য কমিশনের অচলাবস্থা দূর করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

এসএম/এমএমকে/এএসএম

Read Entire Article