অভিজ্ঞতা না থাকায় লোকসানে পড়েন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা

3 months ago 47

ঈদের দ্বিতীয় দিন আড়তদারদের হাঁকডাকে সরব হয়ে উঠেছে রাজধানীর লালবাগের পোস্তা। এখানে শায়েস্তা খান, রাজ নারায়ণ ধর রোডসহ আশপাশের বিভিন্ন সড়কে এখন ব্যস্ত চামড়া ব্যবসায়ীরা।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) পোস্তায় গিয়ে দেখা যায়, পাইকারি ব্যবসায়ীরা মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চামড়া কিনছেন। এরপর এগুলো লবণজাত করা হচ্ছে। পরে সাভারের ট্যানারিগুলোতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এসব চামড়া। তবে পোস্তায় চামড়া নিয়ে আসা মৌসুমি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, তারা সরকার নির্ধারিত দাম পাচ্ছেন না। আর আড়তদাররা বলছেন, অভিজ্ঞতা না থাকায় লোকসানে পড়ছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ডস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএইচএসএমএ) সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ টিপু সুলতান জাগো নিউজকে বলেন, যারা মৌসুমি এবং অস্থায়ী ব্যবসায়ী তাদের মধ্যে চামড়ার শ্রেণীবিন্যাস করার যোগ্যতা কম। কোন ধরনের চামড়া কি রকম দাম, কত স্কয়ার ফিট, চামড়ার ধরন ও সাইজ (ছোট, বড় ও মাঝারি) এসব না বোঝার কারণে তারা তাদের কেনা দামে চামড়া বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে দোষ দিচ্ছেন আড়তদারদের। কিন্তু যারা বুঝে মাপ নিয়ে চামড়া সংগ্রহ করছেন তারা ঠিকই দাম পাচ্ছেন। আড়তদাররা বিভিন্ন দামে চামড়া কিনছেন, ৬০০ টাকা থেকে শুরু করে ১২শ টাকা পর্যন্ত।

jagonews24

তিনি বলেন, চামড়া পচনশীল দ্রব্য। সঠিক সময়ে পরিমাণ মতো লবণ না দিতে পারলে চামড়ায় লেগে থাকা মাংসের কারণেও পচন ধরতে পারে। এসব অভিজ্ঞতা কম হওয়ার কারণে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়েন।

ঈদের পরের দিন চামড়া পোস্তায় কম আসছে বলেও জানান তিনি। তবে, পোস্তায় চামড়া না এলেও সাভারে চলে যাচ্ছে।

তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, এবার লবণের দাম সাড়ে ৩০০, এর সঙ্গে শ্রমিকের খরচ, সব মিলিয়ে একটি চামড়া সাত থেকে ৮০০ টাকায় কিনলেও এর পেছনে খরচ হয়ে যাচ্ছে হাজার টাকার মতো। তাই আড়তদারদেরও চামড়া কেনার সময় অনেক ভেবে কিনতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে বিএইচএসএমএ সভাপতি আফতাব খান জাগো নিউজকে বলেন, ঈদের দ্বিতীয় দিনও ঢাকা শহর ও এর আশপাশে কিছু পশু কোরবানি হয়। সে চামড়াটাও আজকে দুপুর থেকে আসতে শুরু করেছে। তবে ঈদের দিন সোমবার দুপুর থেকেই পোস্তার ব্যবসায়ীরা কাঁচা চামড়া কেনা শুরু করেছেন। ঈদের দিন বিকেল থেকেই বেচাকেনা জমে উঠেছে। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া যত তাড়াতাড়ি আমাদের কাছে আনবেন তত ভালো। আমরা আগেও বলেছি চামড়া কেনার সময় যেন ভেবেচিন্তে কেনে। চামড়ার মান বুঝে আমরা দাম দেবো।

অভিজ্ঞতা না থাকায় লোকসানে পড়েন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা

এ বিষয়ে চামড়ার এক আড়তদার ‘কামাল অ্যান্ড সন্সে’র মালিক মো. কামাল উদদীনের ছেলে আনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আজকে যেসব গরু কোরবানি হয়েছে সেগুলোর চামড়া আসতে শুরু করেছে। এবছর যে হারে চামড়া আসছে তা দেখে মনে হচ্ছে ঈদের দ্বিতীয় দিনে পশু কোরবানি কম হয়েছে। তবে এবছর চামড়ার দাম ভালো। সঠিক সময়ে চামড়া নিয়ে এলে আমরা ফেরত দেই না। পোস্তায় কোনো চামড়া ফেরত বা ফেলে দেওয়া হয়নি। ফড়িয়ারাও দাম পেয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা যেটা বুঝি, ঈদের দিন ৭৫ শতাংশ পশু কোরবানি হয়ে যায়। এর পরের দিন ২০-২৫ শতাংশ এবং সবশেষ তৃতীয় দিনে পাঁচ শতাংশ কোরবানি হয়।

পোস্তায় কথা হয় মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী মো. আব্দুল কাদেরের সঙ্গে। তিনি ১৪-১৫টি চামড়া নিয়ে এসেছেন। জানতে চাইলে বলেন, একেবারে ছোট চামড়ার দাম ৬৫০, মাঝারি ৭৫০-থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত দাম দিয়েছে।

এফএইচ/জেডএইচ/জিকেএস

Read Entire Article