অভিযানের পর অ্যাম্বুলেন্স চালকদের ধর্মঘট, রোগীদের দুর্ভোগ
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকার বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালকরা ধর্মঘটে নেমেছেন। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘটের কারণে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
জানা গেছে, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে যত্রতত্র পার্কিংয়ের অভিযোগে একটি অ্যাম্বুলেন্সকে জরিমানা ও কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স আটকের প্রতিবাদে চালকরা এ ধর্মঘটের ডাক দেন। হাসপাতাল ঘিরে ১৫০টির মতো বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। হাসপাতালের অভ্যন্তরে ও সামনের সড়কে রেখে রোগী পরিবহন করে এসব অ্যাম্বুলেন্স।
আরও জানা গেছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জরুরি বিভাগের পাশে ৫টি অ্যাম্বুলেন্স ও দুটি লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স রাখার অনুমতি দিলেও সব সময় রাখা হয় ২০টির বেশি। এতে রোগী ও স্বজনদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। আজ বেলা ১১টার দিকে হাসপাতালের অভ্যন্তরে ট্রাফিক পুলিশ ও হাসপাতাল প্রশাসন অভিযান চালায়।
আসাদুল ইসলাম নামের এক অ্যাম্বুলেন্সচালক বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভেতরে ১০টি গাড়ি রাখতে অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু আজ বেলা ১১টার দিকে কোনো কিছু না বলে ৫টি অ্যাম্বুলেন্সে শিকল দিয়ে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। এরপর আমরা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি। আমাদের হাসপাতালের ভেতরে অ্যাম্বুলেন্স রাখার সুযোগ না দিলে ধর্মঘট চলবে।
রোগীদের স্বজন খোদেজা বেগম বলেন, অ্যাম্বুলেন্সের জন্য ফোন দিয়ে শুনি, তারা ধর্মঘটে। তাই বাধ্য হয়ে ভ্যানগাড়িতে রোগী নিয়ে হাসপাতালে এসেছি।
ময়মনসিংহ অ্যাম্বুলেন্সচালক সমিতির সাবেক সভাপতি সেলিম মিয়া বলেন, রোগীদের স্বার্থে আমাদের অ্যাম্বুলেন্সগুলো হাসপাতালের ভেতরে থাকতে দেওয়া উচিত। হাসপাতালের ভেতরে অ্যাম্বুলেন্স রাখার জায়গা দিলে এমন কোনো ক্ষতি হবে না। হাসপাতালের নতুন ভবনে আন্ডারগ্রাউন্ডে আমাদের অ্যাম্বুলেন্স রাখতে দিলে আমরা কিছু টাকাও দিতাম। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা মানছে না।
ময়মনসিংহ ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (প্রশাসন) আবু নাসের মো. জহির বলেন, হাসপাতালের চলমান পরিস্থিতি কর্তৃপক্ষকেই সমাধান করতে হবে। হাসপাতাল প্রশাসনের অনুরোধে আজ সেখানে অভিযান চালানো হয়।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মাঈন উদ্দিন খান বলেন, পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্স ও দুটি লাশবাহী গাড়ি হাসপাতালের ভেতরে রাখার জন্য জায়গা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা না মেনে যেখানে–সেখানে অ্যাম্বুলেন্স রাখা হচ্ছিল।
তিনি আরও বলেন, এ ছাড়া অনুমোদিত সংখ্যার চেয়ে বেশি গাড়ি রাখা হচ্ছিল। আজ বেলা ১১টার দিকে ট্রাফিক পুলিশ অভিযান চালিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্সকে জরিমানা করে এবং কয়েকটিতে শিকল লাগিয়ে দেয়। এ কারণে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালানো বন্ধ রেখেছেন চালকেরা। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সচালকদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের জন্য বলা হয়েছে।