বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনে আতঙ্কে ঢাকা শহরের অধিকাংশ বিপণিবিতান বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। অনেক এলাকার পাড়ামহল্লার মুদি, চায়ের দোকানও বন্ধ রয়েছে। তবে অনেক ব্যবসায়ী অসহযোগ আন্দোলনে সমর্থন দিতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছেন।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, চলমান ছাত্র আন্দোলনের কারণে রোববার (৪ আগস্ট) সকাল থেকে ঢাকা শহরের সব এলাকার বিপণিবিতান বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে দেশের চলমান এই পরিস্থিতির কারণে এভাবে যদি আরও কিছুদিন বিপণিবিতান বন্ধ থাকে, তা হলে ব্যবসায়ীদের পথে বসতে হবে। অবিলম্বে এই পরিস্থিতির অবসান হওয়া দরকার।
যদিও রোববার বিকেল সাড়ে তিনটায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করেছে সরকার। এমন অবস্থায় বিপণিবিতানও বন্ধ থাকবে।
রোববার দুপুরে ঢাকার নিউ মার্কেট, চাঁদনীচক, চন্দ্রীমা মার্কেট, ফুলবাড়িয়ার এনেক্সকো টাওয়ার মার্কেট, গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্স, ঢাকা ট্রেড সেন্টার উত্তর ও দক্ষিণ, মৌচাক মার্কট, বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স, যমুনা ফিউচার পার্ক, বাড্ডার হল্যান্ড সেন্টারসহ গুলশান, বনানী, মিরপুরের অধিকাংশ বিপণিবিতান বন্ধ দেখা গেছে।
ঢাকা ট্রেড সেন্টার দক্ষিণের ব্যবসায়ী জালাল কাদের মুঠোফোনে জাগো নিউজকে বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে গত ১৭ জুলাই থেকে ব্যবসা টালমাটাল। এরপর থেকে চলমান কারফিউয়ের কারণে ঢাকার বাইরের ক্রেতা আসছে না। মাঝে দুই-চারদিন মার্কেট চালু থাকলেও আজ অসহযোগ আন্দোলনের কারণে মার্কেট বন্ধ রাখতে হয়েছে।
রাজধানীর পান্থপথে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম বিপণিবিতান বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স মার্কেট। ২১ তলার এই মার্কেটে ২ হাজার ৩২৫টি (১০০টি খাবারের দোকানসহ) রয়েছে। অসহযোগ আন্দোলনের কারণে রোববার এই মার্কেটটি বন্ধ রেখেছে মালিক পক্ষ। তবে গুগলে বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স লিখে সার্চ দিলে সকাল নয়টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মার্কেট খোলা রয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে।
পরে বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের টেলিফোন নম্বরে কল দিলে মাহফুজ নামে একজন জানান, অসহযোগ আন্দোলনে নিরাপত্তার কারণে মার্কেট বন্ধ রয়েছে।
ইসলামপুরের কাপড়ের দোকানি মহিউদ্দিন মহি। মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি বলেন, ঢাকার অন্যান্য এলাকার মতো ইসলামপুরের সব দোকান সকাল থেকে বন্ধ। উল্টো দোকান মালিক ও কর্মচারীদের অনেকে ছাত্রদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, সাধারণত কারফিউতে সব দোকানপাট বন্ধ থাকে। তবে আজ সন্ধ্যা থেকে অনির্দিষ্টকালের যে কারফিউ দেওয়া হয়েছে, এখন পরিস্থিতি কি হবে তা জানি না।
তিনি বলেন, গত ১৯ জুলাই দিনগত রাত ১২টা থেকে কারফিউ দেওয়া হয়েছিল। এরপর ক্রমেই কারফিউ শিথিল হয়েছে। এর ফাঁকে অনেকে মার্কেট, দোকানপাট খুলেছে। তবে এখন কোনো কিছুই ধারণা করতে পারছি না। তাই সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে অবস্থান নিতে বলেছি। কারণ, প্রত্যেক মার্কেটিই কমিটি রয়েছে। তারাই সময় অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে।
এমএমএ/এমআরএম/এএসএম