অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যে ছোট্ট গ্রামীণ শহর পোরেপাঙ্কায় বন্দুকধারীর হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও এক কর্মকর্তা। হামলার পর সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি ভারী অস্ত্রসহ জঙ্গলে পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাকে ধরতে শতাধিক সদস্য নিয়ে ব্যাপক অভিযান চলছে।
ভিক্টোরিয়া পুলিশ প্রধান কমিশনার মাইক বুশ জানান, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৩০ মিনিটের দিকে প্রায় ১০ জন কর্মকর্তা একটি বাড়িতে গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করতে গেলে হামলার শিকার হন। গুলিতে নিহত হন ৫৯ বছর বয়সী এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও ৩৫ বছর বয়সী সিনিয়র কনস্টেবল। আরেক কর্মকর্তা শরীরের নিচের অংশে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
পুলিশ বলছে, অভিযুক্ত বন্দুকধারী একাই পালিয়েছে। তার স্ত্রী ও দুই সন্তানের অবস্থান এখনো অজানা। স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরের বাইরে না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ প্রধান বলেন, আমাদের অগ্রাধিকার হলো তাকে গ্রেফতার করা এবং স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুন>>
স্থানীয় গণমাধ্যমে সন্দেহভাজন বন্দুকধারীর নাম ডেজি ফ্রিম্যান হিসেবে প্রকাশ করা হচ্ছে। তিনি নিজেকে ‘সার্বভৌম নাগরিক’ বা ‘সোভসিট’ দাবি করেন—যারা মনে করে অস্ট্রেলিয়ার আইন ও সরকারের কর্তৃত্ব তাদের ওপর প্রযোজ্য নয়। অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল পুলিশ বলছে, যদিও এ গোষ্ঠীর বেশিরভাগ সদস্য নিরীহ, তবে তাদের ধারণা সহিংসতাকে উসকে দিতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ ও ভিক্টোরিয়ার প্রিমিয়ার জাসিন্তা অ্যালান নিহত কর্মকর্তাদের সাহসিকতার প্রশংসা করেছেন। অপরদিকে স্থানীয় মেয়র সারাহ নিকোলাস নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, আজ আমাদের জন্য গভীর শোক ও হতবাক হওয়ার দিন।
পোরেপাঙ্কা শহরে প্রায় এক হাজার মানুষের বসবাস। শান্ত ও নিরাপদ এলাকা হিসেবে পরিচিত এই অঞ্চলে এমন ঘটনা স্থানীয়দের স্তম্ভিত করেছে। এক স্থানীয় বাসিন্দা বিবিসিকে বলেন, আমরা এতটাই নির্ভার থাকি যে গাড়ি তালাবিহীন রাখি, বাড়ির দরজা খোলা রাখি। এ ধরনের কিছু এখানে কখনো ঘটে না।
অস্ট্রেলিয়ায় অস্ত্র আইন বিশ্বের অন্যতম কড়া, তাই এ ধরনের বন্দুক হামলা বিরল। তবে ২০২২ সালে কুইন্সল্যান্ডে একইভাবে এক গ্রামীণ এলাকায় দুই পুলিশ নিহত হওয়ার ঘটনার সঙ্গে এ হামলার তুলনা টানা হচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি
কেএএ/