অস্ট্রেলিয়ায় শিশুদের জন্য নিষিদ্ধ হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম

2 hours ago 5

১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে অস্ট্রেলিয়া। দেশটির সংসদে এ সংক্রান্ত আইন অনুমোদন করা হয়েছে, যেটিকে বলা হচ্ছে পৃথিবীর কঠোরতম আইন।

এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হতে কমপক্ষে ১২ মাস সময় লাগবে ও এটি বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে সর্বোচ্চ পাঁচ কোটি অস্ট্রেলিয়ান ডলার পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে তরুণ প্রজন্মকে রক্ষা করার জন্য এই আইন প্রয়োজন। এ বিষয়টিতে অনেক বাবা-মাও একমত পোষণ করেছেন।

তবে সমালোচকরা বলেছেন, এই নিষেধাজ্ঞা কীভাবে কার্যকর হবে এবং গোপনীয়তা ও সামাজিক সংযোগের ওপর এর প্রভাব কেমন পড়বে, তা এখনও অস্পষ্ট।

শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার প্রচেষ্টা এবারই প্রথম নয়। তবে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের ন্যূনতম বয়সসীমা ১৬ বছর নির্ধারণ করাটা সর্বোচ্চ।

সেদিক থেকে এবারের এই উদ্যোগ আলাদা। যারা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছেন বা হয়তো বাবা-মায়ের অনুমতি নিয়েই করছেন, এই নিয়ম তাদের জন্যও প্রযোজ্য হবে।

বৃহস্পতিবার রাতে দেশটির সেনেটে ৩৪-১৯ ভোটে বিলটি পাস হয়। তারপর এটি শুক্রবার সকালে প্রতিনিধি পরিষদে পাস হয়।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা চাই আমাদের শিশুদের একটি শৈশবকাল থাকুক ও বাবা-মায়েরা জানুক যে আমরা তাদের পাশে আছি।

তবে কোন কোন প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ করা হবে, এই আইনে তা এখনও নির্দিষ্ট করা হয়নি। দেশটির যোগাযোগমন্ত্রী এসব সিদ্ধান্ত নিবেন। সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তিনি অস্ট্রেলিয়ার ই-সেফটি কমিশনারের পরামর্শ নিবেন।

তবে মন্ত্রী মিশেল রোল্যান্ড বলেছেন যে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে স্ন্যাপচ্যাট, টিকটক, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও এক্স অন্তর্ভুক্ত থাকবে। গেমিং ও মেসেজিং প্ল্যাটফর্মগুলো এ থেকে অব্যাহতি পাবে। সেই সঙ্গে অ্যাকাউন্ট ছাড়াই যেসব সাইটে প্রবেশ করা যায়, তা নিষিদ্ধ হবে না। যেমন– ইউটিউব।

সরকার বলেছে, এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে তারা বয়স যাচাই প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করবে ও বিভিন্ন বিকল্প আগামী মাসগুলোতে পরীক্ষা করা হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপরই এই প্রক্রিয়া চালানোর দায়িত্ব থাকবে।

বয়স নির্ধারণের জন্য সর্বোচ্চ বায়োমেট্রিকস বা পরিচয়পত্রের তথ্যের ওপর নির্ভর করা হবে হয়তো।

তাই ডিজিটাল গবেষকরা বলছে যে এটি কার্যকর করা যাবে, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। ভিপিএন-এর মতো টুল ব্যবহার করে সহজেই এই নিয়মাবলী এড়ানো যেতে পারে। ভিপিএন ব্যবহার করলে এটি বোঝা যায় না যে কোন দেশ থেকে লগইন করা হয়েছে, বরং দেখা যে অন্য কোনো দেশ থেকে লগ ইন করা হয়েছে। তারা বলছেন, এটি করতে গিয়ে যেন ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা না হয়।

এই সংস্কারের আগে একটি সীমিত আকারের জরিপ করা হয়েছে দেশটিতে। তাতে দেখা গেছে, বেশিরভাগ অস্ট্রেলিয়ান বাবা-মা ও অভিভাবকরা এই সংস্কারের পক্ষে সমর্থন করেছেন।

সূত্র: বিবিসি

এমএসএম

Read Entire Article