‘অস্তিত্বের লড়াইয়ে জীবন দিতে প্রস্তুত’

3 hours ago 5

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড জাহাজ ভাঙা শিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা বলেছেন, জাহাজ ভাঙা শিল্প হচ্ছে আমাদের অস্তিত্ব, লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান। আমাদের এই অস্তিত্ব জাহাজ ভাঙা শিল্প বন্ধের পাঁয়তারা করছে দেশি-বিদেশি কিছু ষড়যন্ত্রকারী সংস্থা। সেই ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অস্তিত্বের লড়াইয়ে আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত।  

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় জাহাজ ভাঙা শিল্প ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে ভাটিয়ারী ইউনিয়নের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিশাল গণজমায়েত ও মানববন্ধনে তারা এসব কথা বলেন।

এসময় গণজমায়েত ও মানববন্ধনে দেশের একমাত্র লৌহ ভ্রাম্যমাণ খনিজ সম্পদ জাহাজ ভাঙা শিল্প বাঁচাতে হাজার হাজার শিপইয়ার্ড সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা বিভিন্ন প্রতিবাদী ব্যানার নিয়ে উপস্থিত ছিলেন।

জাহাজ ভাঙা শিল্প ব্যবসায়ী শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন ও সদস্য সচিব মোহাম্মদ জাবেদের নেতৃত্বে বক্তারা বলেন, দেশের একমাত্র বৃহত্তর জাহাজ ভাঙা কারখানা সীতাকুণ্ড উপজেলার মধ্যে। এই জাহাজ ভাঙা শিল্পের সঙ্গে জড়িত রয়েছে হাজার হাজার ব্যবসায়ী ও লাখ লাখ শ্রমিক। সেই জাহাজ ভাঙা শিল্পকে বন্ধ করতে প্রতিনিয়ত দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে। এই জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের অস্তিত্ব। সেই অস্তিত্ব লড়াইয়ে আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত। 

বক্তারা বলেন, এই শিল্প এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ ও পরিবেশসম্মত। তারপরেও এই শিল্পকে নিয়ে নেতিবাচক অভিযোগ আর মিথ্যা অপবাদ দেশে-বিদেশে চলমান রয়েছে। এসব কারণে পুরোনো জাহাজ আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম। এছাড়াও পাশাপাশি যেসব জাহাজ রিসাইক্লিং -এর জন্য আনা হচ্ছে সেসব আমদানীকৃত জাহাজের বিচিং এবং কাটিং পারমিশন প্রাপ্তিতেও অনাকাঙ্ক্ষিত ও অহেতুক মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হচ্ছে। প্রতিবছর জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প কারখানা থেকে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা রাজস্ব দেয়।

বক্তারা আরো বলেন, নানা অজুহাতে এই শিল্পের টুটি চেপে ধরার পাঁয়তারা চলছে বহুদিন ধরে। অথচ সরকারের আইন মেনেই এই শিল্প হংকং কনভেনশনের (জাহাজ ভাঙা শিল্পকে পরিবেশসম্মত ও নিরাপদ বজায় রাখার আন্তর্জাতিক আইন) আলোকে গ্রিন শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। সাতটি শিপ রিসাইক্লিং ইয়ার্ড ইতোমধ্যে গ্রিন ইয়ার্ড হিসেবে সনদ লাভ করেছে। আরো ১০টি ইয়ার্ড গ্রিন সনদ পেতে প্রস্তুত। বাকিগুলোও গ্রিন ইয়ার্ড হিসেবে সনদ পেতে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

তারা বলেন, অন্ধকার অধ্যায় আর হতাশার গল্প ছাপিয়ে এই খাত এখন বলছে- সম্ভাবনা আর রূপান্তরের গল্প। আর এমন সময়ে পরিবেশের দোহাই দিয়ে এই শিল্পকে বন্ধ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে দেশি-বিদেশি কিছু ষড়যন্ত্রকারী সংস্থা। সীতাকুণ্ডবাসী জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প বাঁচাতে যেকোনো ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে জীবন দিতেও প্রস্তুত। 

এ ষড়যন্ত্র যদি বন্ধ না হয় সামনে আরো কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন জাহাজ ভাঙা শিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা।

এসময় বক্তব্য দেন খোরশেদ আলম, নবী, মো. খালেদ মঞ্জু, শেখ সাহাব উদ্দিন, মো. নছিম, মো. সালামত আলী, মো. মইন উদ্দিন, মো. আজিজুর রহমান, মো. শাহ জামান, মো. সাহাব উদ্দিন, মো. আলমগীর, মোবিনউদ্দিন মিন্টু প্রমুখ।

Read Entire Article