আ.লীগ নামে কেউ রাজনীতি করতে পারবে না : সালাহউদ্দিন আহমেদ

2 hours ago 3

দেশে আওয়ামী লীগ নামে কেউ রাজনীতি করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

বুধবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আঞ্চলিক সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত ‘জাতীয় ঐক্য ও বর্তমান বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সালাহউদ্দিন আহমেদ এ মন্তব্য করেন।

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, বাংলাদেশ মানুষ গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করেছে, তাদের বিতাড়িত করেছে। গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে আমি দলটির বিচার দাবি জানাচ্ছি। এ বিচার কাজ সম্পন্ন করতে সংবিধানের বিধান মোতাবেক আইন প্রস্তুত করা হোক।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগকে রাজপথে কতদিন পুলিশ দিয়ে ঠেকিয়ে রাখবেন? আপনারা বলছেন, আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দেবেন না কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন? আমরা বলেছিলাম, সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হোক। কিন্তু এ বিষয়ে আপনারা এখনো পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ নেননি।

‘শর্ষের মধ্যে ভূত’ রেখে প্রধান উপদেষ্টা কখনো সফল হতে পারবেন না বলে মন্তব্য করে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে শেখ হাসিনার দোসররা আছে। তাদের বহাল রেখে অন্তর্বর্তী সরকার বেশি দূর এগোতে পারবে না। তাই প্রশাসন কিংবা বিচার বিভাগ, যাই হোক বা নির্বাচন ব্যবস্থার মধ্য থেকে ফ্যাসিবাদীদের পরিষ্কার করতে হবে।

৫ আগস্টের আগে উচ্চ আদালত থেকে অধস্তন আদালত পর্যন্ত যারা রাতের বেলা কোর্ট বসিয়ে বিরোধী দলের নেতাদের শান্তি দিয়েছে, তাদের কারো চাকরি গেছে কি না- এই প্রশ্ন তোলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ।

শেখ হাসিনা দেশের বাইরে থেকে বিশৃঙ্খলা করার জন্য অর্থ বিনিয়োগ করেছেন- প্রধান উপদেষ্টা এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসররা উপদেষ্টা পরিষদে অন্তর্ভূক্ত আছেন। আমরা তাদের বাদ দেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলাম, কিন্তু সরকার পাত্তা দেননি। সচিবালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ সব জায়গায় ফ্যাসিবাদের দোসররা বসে আছে। এদের বহাল রেখে প্রধান উপদেষ্টা বেশি দূর এগোতে পারবেন না।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে বেশি সময় ক্ষেপণের জন্য কোনো কৌশল অবলম্বন করলে, জাতি তা মেনে নিবে না। সংস্কার ও নির্বাচন দুটোকে গুলিয়ে ফেলা ঠিক হবে না।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দিব- এ বক্তব্যও সঠিক নয়। অন্তর্বর্তী সরকারের নামে সাংবিধানিক ভাবেই সরকার শপথ নিয়েছে। কিন্তু লেজিটেমিসি ক্রাইসিস দূর করতে এই মুহূর্তে নির্বাচিত সংসদ দরকার।

সবার সঙ্গে আলোচনা করে অন্তর্বর্তী সরকারকে একটি দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়ে- বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমরা বলছি জুলাই আগস্টে নির্বাচন সম্ভব। তার আগে নির্বাচনের জন্য আইনি ও প্রতিষ্ঠানিক কিছু সংস্কার করে আমরা নির্বাচনমুখী হতে চাই। কেউ কেউ বলছেন নির্বাচন আগে, আবার কেউ কেউ বলছেন সংস্কার আগে। নির্বাচন ও সংস্কার দুটিকে গুলিয়ে ফেলা ঠিক হবে না। সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া।

যতদিন দেশ থাকবে ততদিন আমাদের সংস্কারের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।

নির্বাচনের জন্য ছয় মাস যথেষ্ট সময় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজ প্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন রিপোর্ট জমা দিয়েছে। এর আগে আরও চারটি সংস্কার জমা দিয়েছে। আমাদের সংস্কার কমিশনের কাছে আমরা আমাদের পরামর্শ জমা দিয়েছি। জানুয়ারিতে আলোচনার করার কথা ছিল। আর এখন বলছেন ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি আলোচনা করবেন। এরপর আলোচনার নামে কতোদিন পার করবেন?

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি দলের পক্ষ থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র তৈরি করেছে। ছাত্রদের ঘোষণাপত্রের সঙ্গে সমন্বয় করে কীভাবে রাজনৈতিক দলিল হিসেবে এটিকে সাংবিধানিক ভিত্তি দেওয়া যায় তা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। এ নিয়ে তাড়াহুড়ো না করার আহ্বান জানান তিনি।

আঞ্চলিক সম্পাদক পরিষদের (আসপ) উদ্যোগে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. ফজলুর রহমান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম ও ঢাকা সাংবাদিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম দোলন প্রমুখ।

Read Entire Article