আইএফটি প্রতিষ্ঠায় হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ও বুয়েটের মধ্যে সমঝোতা

3 hours ago 3

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজির প্রাথমিক অবকাঠামো নির্মাণ (প্রথম সংশোধন) প্রকল্পের আওতায় বুয়েট ক্যাম্পাসে ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি (আইএফটি) প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং বুয়েটের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বুয়েটের উপাচার্য এবং হাই-টেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারক সই করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

তিনি বলেন, আমাদের যে সম্মিলিত অভিজ্ঞতা তার সারসংক্ষেপে বলা যায় আমাদের ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমির মধ্যে ব্যাপক দূরত্ব রয়েছে এবং এই দুইয়ের উভয়েরই রয়েছে রিসার্চ গ্যাপ যা আন্তর্জাতিক মানের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে পিছিয়ে। এ সমস্যার সমাধানের উপায় হচ্ছে ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি।

বিশেষ সহকারী বলেন, বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার যে ইতিহাস এবং এর যে সাফল্য এ দুইয়ের অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক বিষয়গুলো মিলালে দেখা যাবে যেখানে ‘সাইজেবল ইকোনোমি’ বা বড় অর্থনীতির উপস্থিতি নেই সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সফল হয় না। সে বিষয়টা বিবেচনায় চর এলাকা থেকে ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি বুয়েটে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কেননা চর এলাকায় অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তির জন্য দরকারি ছাত্র, শিক্ষক ও গবেষকসহ প্রয়োজনীয় রিসোর্স মবিলাইজেশন প্রায় অসম্ভব।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, বুয়েটের আটটি ইনস্টিটিউটশন আছে, তাদের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ওয়াটার ম্যানেজমেন্টে বেশ কিছু সফলতা রয়েছে। দেশব্যাপী বুয়েট সফলতার সঙ্গে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের মনে হয়েছে এটা যদি বুয়েটের তত্ত্বাবধানে দেয়া যায় তাহলে রিসোর্স মবিলাইজেশন এবং স্কিল গ্যাপ পূরণের দিক থেকে আইএফটি সফল হবে।

বিশেষ সহকারী আরও বলেন, এই ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি স্থাপনে আমাদের নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণ এবং ডিজাইন বা আর্কিটেকচারে কোন অর্থ ব্যয় করতে হবে না।

আইসিটির পক্ষ থেকে বুয়েটকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, আমরা ইন্ডাস্ট্রি এবং একাডেমিয়ার দূরত্ব ঘোচাতে এমন একটা মডালিডি বের করবো যেখানে বিদেশ ফেরত ফ্যালো শিক্ষকরা কোর্স নিতে পারবেন। ইন্ডাস্ট্রির প্রয়োজনীয়তা ও দক্ষতা অনুসারে আমরা স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী কোর্স কারিকুলাম ডিজাইন করব। যা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রচলিত নিয়মের অধীনে করা সম্ভব নয়। আশা করি এর মাধ্যমে বাংলাদেশের স্কিলগ্যাপ পূরণের যাত্রাটা শুরু হবে।

আরও পড়ুন:

তিনি আরও বলেন, আমরা দু’ বছরের মধ্যে এই প্রকল্পের ভৌত অবকাঠামো শেষ করবো, পরবর্তী দু'বছরে কোর্স এবং একাডেমিক অপারেশনের এক্সিলেন্স আনার জন্য মোট চার বছরের টার্গেট নিয়েছি। এই চার বছর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আইসিটি এবং বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সরাসরি সম্পৃক্ততা থাকবে। পরবর্তীতে এই চার বছরের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ‘কোর্স অফ অ্যাকশন’ কি হবে তা নির্ধারণ করা হবে।

বুয়েটের উপাচার্য প্রফেসর ড. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান আইসিটির সঙ্গে যৌথভাবে বুয়েটকে কাজ করার সুযোগ করে দেয়ায় বিশেষ সহকারীকে ধন্যবাদ জানান। উদ্যোগটি সময়োপযোগী এবং যৌক্তিক, এটি বুয়েটের জন্য একটি বড় সুযোগ বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

বুয়েটের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরী বলেন, ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজিসমূহ নিজেই পরিবর্তনশীল, আজকে যা ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি বলে সংজ্ঞায়িত, ৫ বছর পরে তা থাকবে না। তাই এ ধরণের স্কিল সেটের জন্য বাজারবান্ধব ডায়নামিক এবং ফ্লেজিবল প্রতিষ্ঠান দরকার।

উল্লেখ্য, এই ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজিতে মেশিন লার্নিং, এআই, ইন্টারনেট অফ রোবোটিক্স থিংস, মাইক্রো- ফেব্রিকেশন, ব্লকচেইন, প্রযুক্তিগত ইথিক্স, জৈব প্রযুক্তি, ন্যানোপ্রযুক্তি, নিউরো টেকনোলজি, ডাটা সায়েন্স, সাইবার সিকিউরিটি, হাইপার-অটোমেশন, বিহেভিয়ার, ইন্টেলিজেন্স ও এক্সপেরিয়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং, অন্টারপ্রেনিউরশিপ, ইনোভেশন স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম সাস্টেইনেবিলিটি ইত্যাদি পাঠদান করা হবে।

অনুষ্ঠানে আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, এনডিসি, বুয়েটের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরী, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম আমিরুল ইসলাম, এনডিসি, প্রকল্প পরিচালক ড. মো. মনসুর আলমসহ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং বুয়েটের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এমইউ/এনএইচআর/এমএস

Read Entire Article