আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশ থেকে প্রতি বছর গড়ে ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, বাণিজ্যের নামে অর্থপাচার করা হয়েছে। দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা সম্ভব। যদিও তা কিছুটা সময়সাপেক্ষ। অর্থপাচার বন্ধে রাজনীতি, আমলাতন্ত্র ও ব্যবসাকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।
শনিবার (২ অক্টোবর) রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম কার্যালয়ে পাচার হওয়া অর্থ ও তা উদ্ধারের উপায় শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক। ইআরএফ ও সম্ভাবনার বাংলাদেশ যৌথভাবে এ সেমিনার আয়োজন করে। গ্রিনওয়াচ ঢাকার সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার বলয় প্রতিষ্ঠা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখলের মাধ্যমে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ পাচার করা হয়েছে। এখানে রাজনীতি, আমলাতন্ত্র ও ব্যবসা এই ত্রিমুখী আঁতাত মৌলিক ভূমিকা পালন করেছে। সব প্রতিষ্ঠানেই দীর্ঘ সময় ধরে দলীয়করণের চর্চা হয়েছে। গত ১৫-১৬ বছরে যার চূড়ান্ত রূপ দেখেছি আমরা। যেখানে আমলাতন্ত্রকে কর্তৃত্ব দিয়েছে রাজনৈতিক শক্তি যেটার বাস্তবায়নে ব্যবহার করা হয়েছে বিভিন্ন এজেন্সিকে। এসব জায়গায় কতটুকু পরিবর্তন আনা যাবে তা গুরুত্বপূর্ণ। যে পরিবর্তন আসবে তা যেন টেকসই হয়।
তিনি বলেন, দেশ থেকে মোট কি পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা সম্ভব নয়। ব্যাংক খাতের মতো আনুষ্ঠানিক মাধ্যম ব্যবহার করে ১৭ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ পাচারের কথা জানা যায়। বিভিন্ন ঘটনার ভিত্তিতে ধারণা করা যায় যে এ দেশ থেকে বছরে গড়ে ১২-১৫ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দুর্নীতি ও অর্থ পাচারে সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। বাংলাদেশের ব্যাংক খাতকে যে খাদের কিনারায় ঠেলে দেওয়া হয়েছে তার পেছনে মূল দায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বর্তমান পরিস্থিতিতে এসব প্রতিষ্ঠানের মৌলিক সংস্কারের পাশাপাশি ঢেলে সাজানো ছাড়া বিকল্প নেই।
ইএআর/এমআইএইচএস/জেআইএম