আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে বললেন ওবায়দুল কাদের

3 months ago 26

শিক্ষক আন্দোলন এবং শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলন নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

মঙ্গলবার সকালে গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির যৌথসভায় এ কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, শিক্ষক আন্দোলন এবং শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দুটি অরাজনৈতিক। কিন্তু এই আন্দোলনে বিএনপির মতো কিছু অশুভ মহলের সমর্থন নিয়ে ভাবতে হবে আওয়ামী লীগকে।

তিনি বলেন, এই অশুভ শক্তিকে যেন উস্কানি দিয়ে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে তার জন্য রাজধানীসহ সারা দেশের আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগকে সজাগ থাকতে হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, কারণটা আইনগত, রাজনৈতিক নয়। বিএনপি সব কিছুতে রাজনৈতিক গন্ধ পায়। আইনি লড়াই তারা ঠিকমতো করেনি। মাসের পর মাস এমনকি বছর কেটে গেছে তাকে উপস্থিত হতে দেননি, জামিনও চাননি। তারা আইনি লড়াইয়ে ব্যর্থ। এই শহরে দৃশ্যমান একটা বিক্ষোভ মিছিল খালেদা জিয়ার জন্য করেছে এমন প্রমাণ আমাদের সামনে নেই।

বিএনপি বলছে প্রধানমন্ত্রী ভিক্ষার ঝুড়ি নিয়ে চীনে গেছে এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ভিক্ষার ঝুড়ি নিয়ে প্যারিস কনসোর্টিয়াম বৈঠক তাদের অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান বারবার ছুটে গেছেন, আমাদের কোনো অর্থমন্ত্রী প্যারিস কনসোর্টিয়াম বৈঠকে জাননি। বাজেটের আগেও জাননি।

আপনাদের আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বসার কথা ছিল, সেটা কবে বসবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকে বসবো আমরা কি বলেছি? পরে সাংবাদিকরা শিক্ষকরা বলেছেন এমন উত্তর দিলে তিনি বলেন, এখন তারা কি বললো সেটা তো আমাদের দেখার বিষয় নয়।

তিনি আরও বলেন, আমাদেরও তো অসুবিধার বিষয় থাকতে পারে। আমরা তাদের প্রতি কোনোপ্রকার অসম্মান করছি না। আমরা তাদের আন্দোলন পর্যবেক্ষণ করছি। সময়মতো এর সমাধান হয়ে যাবে এটাই আমরা আশা করি।

আওয়ামী লীগ কী সরকারের পক্ষে নাকি আদালতের পক্ষে এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকার সরকারের পক্ষে, আওয়ামী লীগও সরকারের পক্ষে।

       আরও পড়ুন

ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। পাশাপাশি পেনশনের বিষয়ে শিক্ষক সমাজেরও আন্দোলন, কর্মবিরতি চলছে। এই দুটি কর্মসূচি চলমান অবস্থায় আমরা খুব সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। যতটুকু জানি, কোটা সংস্কার বিরোধী যে আন্দোলন শিক্ষার্থীরা করছে তাদের আজকে নির্ধারত কর্মসূচি নেই, সেজন্য আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই।

তিনি বলেন, এমনও শুনেছি, তারা উচ্চ আদালতে যে মামলা তাদের পক্ষ থেকে ল’ইয়ার নিয়োগ করেছে এবং তারা আদালতে যথাসময়ে হাজির হবেন। এটা একটা যোক্তিক সিদ্ধান্ত সেজন্য ধন্যবাদ জানাই।

আওয়ামী লীগের অবস্থান পরিষ্কার জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, আমাদের অবস্থান পরিষ্কার, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী পরিপত্র জারি করে কোটামুক্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এতদিন সরকারি কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সাতজন একটা মামলা করেন। হাইকোর্ট একটা রায় দেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে সরকার পক্ষ এপিল বিভাগে এ নিয়ম অনুযায়ী আপিল হয়েছে। ফুল কোর্টে আমারা আশা করছি শিগগিরই শুনানি হবে।

কোটাবিরোধী নয় কোটা সংস্কারে আন্দোলন হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের অবস্থান পরিষ্কার। যারা আন্দোলন করছেন, আমাদের বিভিন্ন মিডিয়া কোটাবিরোধী আন্দোলন, তবে তারা যেটা বলছে কোটা সংস্কার চায়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, শিক্ষার্থীদের কোটা বাতিলের আন্দোলন চলছে। পাশাপাশি পেনশনের বিষয়ে শিক্ষকরা একটা আন্দোলন ও কর্মসূচি পালন করছেন। এই দুটি কর্মসূচিকে আমরা সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।

তিনি বলেন, শোকের মাস আগস্ট আবারও ফিরে এসেছে। ১ আগস্ট থেকে আমাদের মাসব্যাপী কর্মসূচি রয়েছে। ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে এই মাসের কর্মসূচি পালনের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। ঢাকায় যারা কর্মসূচি নেবেন তারা কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে মিল রেখে করবেন।

এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জি. আব্দুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মি আহমেদ ও উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।

এসইউজে/এমআরএম/জিকেএস

Read Entire Article