আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রীরা কে কোথায়?

2 months ago 25

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে মন্ত্রিসভাও বিলুপ্ত হয়ে যায়। শেখ হাসিনার আকস্মিক এমন সিদ্ধান্তে দিশেহারা হন তার উপদেষ্টা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য ও দলীয় নেতারা। কেউ কেউ তাৎক্ষণিক দেশ ছাড়েন। কেউ নিরাপদ আশ্রয় নেন দেশেই। আবার আন্দোলনের গতিবিধি আঁচ পেয়ে অনেকে আগেই দেশ ছেড়েছেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের সদ্য সাবেক মন্ত্রীরা কে কোথায় জানতে খোঁজ নেয় জাগো নিউজ। এতে বেরিয়ে আসে, সিনিয়র মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের নম্বরটি খোলা আছে। তবে তিনি ফোনে সাড়া দেননি। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি দেশেই আছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দেশে ছেড়ে দুবাইয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখান থেকে অন্যত্র যেতে পারেন। অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী রোববারই ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহার করে দেশ ছেড়েছেন বলে বিমানবন্দর সূত্র জানিয়েছে।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নম্বরটি খোলা পাওয়া গেছে। তবে তিনি কল রিসিভ করেননি। ধারণা করা হচ্ছে তিনিও দেশে আছেন। শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনেরও খোঁজ মেলেনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের মুঠোফোনটিও খোলা আছে, কিন্তু তিনি কল রিসিভ করছেন না।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের আগের দিনই দেশ ছেড়েছেন বলে বিমানবন্দরের নথিতে পাওয়া গেছে। বিমানমন্ত্রী কর্নেল (অব.) ফারুক খানের মুঠোফোনটিও খোলা, তিনিও কল ধরেননি। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি দেশেই আছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ হাছান মাহমুদও দেশে আছেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। তিনি দেশ ছাড়তে গিয়ে আটক হয়েছেন, এমন গুজবও প্রচার হয়েছে।

সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের ফোনেও কল ঢুকেছে। তারা রিসিভ করেননি। তাদের অবস্থানও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুস সালামেরও অবস্থান পাওয়া যায়নি। ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলালের ফোন নম্বর খোলা তিনি রিসিভ করেননি। ধারণা করা হচ্ছে তিনিও দেশে আছেন।

গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী রোববার (৪ আগস্ট) দেশ ছেড়েছেন। বিমানবন্দরে তার ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহারের রেকর্ড পাওয়া গেছে। ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মৎস্যমন্ত্রী আব্দুর রহমানের অবস্থান নিশ্চিত করা যায়নি। কৃষিমন্ত্রী আবদুস শহীদ ৪ আগস্ট দেশ ছাড়বেন বলে বিমানবন্দর সূত্রের বরাতে তথ্য এসেছিল। তবে তিনি জনসংযোগ কর্মকর্তার মাধ্যমে সেদিন দাবি করেছিলেন, দেশে আছেন। এরপর আর হদিস মেলেনি।

আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রীরা কে কোথায়?

বিজ্ঞানমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন, রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম, জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন, পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অবস্থান স্পষ্ট নয়। তবে বেশিরভাগ দেশে আছেন। নিরাপদে অবস্থান করে দেশত্যাগের নিরাপদ পথ খুঁজছেন।

গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী টুসি পরিবারসহ মালয়েশিয়া ও অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান কানাডায় পাড়ি জমিয়েছেন। এদিকে, দেশত্যাগ করতে গিয়ে ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলক আটক হয়েছেন।

এছাড়া বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা দেশ ছেড়েছেন। তবে বেশিরভাগ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও সংসদ সদস্য দেশেই আছেন। আত্মীয়স্বজন বা পরিচিতজনদের কাছে আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকে আবার বিশেষ বাহিনীর নিরাপদ আবাসে অবস্থান করছেন।

এসইউজে/এসএইচএস/জিকেএস

Read Entire Article