আগস্টে ৪৫১ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪২৮

13 hours ago 5

গেল আগস্ট মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৫১টি। এতে ৪২৮ জন নিহত এবং ৭৯১ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও হতাহত ঘটেছে মোটরসাইকেল ঘিরে।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক দুর্ঘটনা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। সংস্থাটি নয়টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মাধ্যম ও নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে নারী ৬৮ ও শিশু ৩৪ জন।

দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৪৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৩২ চালক ও আরোহী। যা মোট দুর্ঘটনার ৩১ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং মোট নিহতের ৩০ দশমিক ৮৪ শতাংশ। পথচারী নিহত হয়েছেন ৮৩ জন, যা নিহতের ১৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫২ জন, অর্থাৎ ১২ দশমিক ১৪ শতাংশ।

এ সময়ে ১৯টি নৌ-দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত, ১৭ জন আহত ও নয়জন নিখোঁজ রয়েছেন। ৩৭টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ৩১ জন নিহত এবং ১১ জন আহত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনায় বাসের ৩০ যাত্রী; ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, পিকআপ, ট্রলি ও লরির ২৭ আরোহী; প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও অ্যাম্বুলেন্সের ২১ আরোহী; তিনচাকার যানের ৯৭ যাত্রী; শ্যালো ইঞ্জিনচালিত স্থানীয় যানের (নসিমন-ভটভটি-টমটম-মাহিন্দ্র) ৩৩ যাত্রী এবং বাইসাইকেলের পাঁচ আরোহী নিহত হয়েছেন।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২১৪টি জাতীয় মহাসড়কে, ১৩৫টি আঞ্চলিক সড়কে, ৪২টি গ্রামীণ সড়কে এবং ৬০টি শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে। দুর্ঘটনাগুলোর ৯০টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২০৭টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ৮৫টি পথচারীকে চাপা বা ধাক্কা দেওয়া, ৬২টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং সাতটি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১১৯টি দুর্ঘটনায় ১১৭ জন নিহত হয়েছেন। আর বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে কম ১৮টি দুর্ঘটনায় ১৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। একক জেলা হিসেবে ঢাকায় ৩৬টি দুর্ঘটনায় ৩২ জনের জীবন গেছে। সবচেয়ে কম চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছয়টি দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। রাজধানী ঢাকায় ৩৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত এবং ৪৬ জন আহত হয়েছেন।

সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে- ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন ও সড়ক, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।

সুপারিশ হিসেবে বলা হয়েছে-দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি, চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি, পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্ব রাস্তা (সার্ভিস রোড) তৈরি, পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ, রেল ও নৌপথ সংস্কার করে সড়ক পথের ওপর চাপ কমানো, টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন।

এফএইচ/একিউএফ/এমএস

Read Entire Article