আগামী জাতীয় নির্বাচনে গঠিত সংসদ প্রথম তিন মাস সংবিধান সংস্কার সভা হিসেবে কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাজধানীতে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান কার্যালয়ে দলের জাতীয় সমন্বয় কমিটির বর্ধিত সভায় এমন প্রস্তাব আসে। গত দুই মাসের সাংগঠনিক অগ্রগতি, রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেবার প্রেক্ষিত, অর্থনৈতিক হিসাবসহ আগামী দিনের পরিকল্পনা নিয়ে সভায় আলোচনা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন অন্যতম জাতীয় সমন্বয়ক জাকিয়া শিশির।
সভায় দলের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সর্বোত্তম উপায় হবে একই ভোটে জাতীয় সংসদ ও সংবিধান সংস্কার সভার নির্বাচন। নির্বাচিতরা প্রথম তিন মাসে জুলাই সনদের উপর ভিত্তি করে সংবিধানের সংস্কার করবেন। এরপর তারা সরকার গঠন করবেন। এটা রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রস্তাব। কিন্তু আমরা চাই, সকল রাজনৈতিক দল ও নাগরিকদের সাথে সংলাপের মাধ্যমে এই পথ-পদ্ধতি নির্ধারিত হোক।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করেছিলাম- গণঅভ্যুত্থানের সরকার অতীতের সরকারগুলোর স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচারের পথ থেকে বেরিয়ে এসে নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত থেকে শুরু করে সংবিধান সংস্কারের টেকসই পথে জাতিকে এগিয়ে নিবেন। কিন্তু বাস্তবে সরকার মব জাস্টিস থেকে শুরু করে অভ্যুত্থানের শক্তিদের মধ্যে বিভেদ-বিভক্তি তৈরি এবং সর্বোপরি সংবিধান সংস্কারের সুযোগ ব্যর্থ করার পথে হাঁটছেন। ফলাফল দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়নি। জুলাই সনদ নিয়ে প্রচণ্ড অস্থিরতা ও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। দেশে পুরাতন ফ্যাসিস্ট ফিরে আসা বা নতুন ফ্যাসিস্ট তৈরির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
রাতে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশকে আশু ভয়াবহ সংকট থেকে রক্ষায় সভায় চার দফা প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। এগুলো হলো- সংবিধান সংস্কারের পথ-পদ্ধতি নির্ধারণে রাজনৈতিক দল ও নাগরিকদের সাথে আলোচনার জন্য গণসংলাপের উদ্যোগ নেওয়া; অবিলম্বে সকল উপদেষ্টার ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপ্রাপ্তদের সম্পদের হিসাব জাতির সামনে প্রকাশ করা; দক্ষতা মূল্যায়ন করে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন, উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের উদ্যোগ নিশ্চিত করা এবং অবিলম্বে পুলিশ, নির্বাচন কমিশন, জনপ্রশাসনসহ সব গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার (যেগুলোতে সংবিধান সংস্কারের প্রয়োজন নেই) প্রস্তাব বাস্তবায়ন শুরু করা।
সভায় আরও আলোচনা করেন দলের প্রচার সমন্বয়ক সৈয়দ হাসিবউদ্দীন হোসেন, অর্থ সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া, দপ্তর সমন্বয়ক নাইমুল ইসলাম নয়ন, ন্যায়পাল রায়হান কবীর, জাতীয় সমন্বয়ক শেখ নাসিরউদ্দীন, ফরিদুল ইসলাম প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন দলের সাংগঠনিক সমন্বয়ক (ভারপ্রাপ্ত) সোহেল শিকদার।