‘আগামীর রাজনীতি কী হবে তার সিদ্ধান্ত দেবে জনগণ’

5 days ago 8

আগামীর রাজনীতি কি হবে তার সিদ্ধান্ত জনগণ ছাড়া কেউ দিতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, জনগণের সিদ্ধান্ত জনগণকে নিতে দেন, অন্য কেউ দিতে পারবে না। আমরা দিনক্ষণ বলছি না, আমরা বলছি সবাই মিলে দেশ গড়ি। সবাই মিলে হাসিনার পতন ঘটিয়েছে। একক ক্ষমতায় গেলেও যাব না। সবাইকে নিয়ে ক্ষমতায় গিয়ে জাতীয় সরকার করা হবে।  

শনিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের দুই নম্বর গেট বিপ্লব উদ্যানে যুবদল আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। 

সমাবেশে শেষে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে জিয়াউর রহমান ‘উই রিভোল্ট’-এর মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের শুরুর ঐতিহাসিক স্থান চট্টগ্রাম বিপ্লব উদ্যান থেকে কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র পর্যন্ত ‘যুব পদযাত্রার’ আয়োজন করে নগর যুবদল।

বিএনপিকে যারা যখনই থামাতে গিয়েছে, তখনই তারা ধ্বংস হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপিকে থামানোর চেষ্টা করবেন না। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মাধ্যমে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাদের সরকার, তাদের সংসদ দেখতে চায়। এটা বাধাগ্রস্ত করার কোনো সুযোগ নেই। বিএনপি এর জন্য বিগত দিনে অনেক ত্যাগ শিকার করেছে, প্রয়োজনে আবার ত্যাগ শিকার করতে আমরা রাজি আছি।

তিনি বলেন, জনগণের সিদ্ধান্ত অনেকে অনেকবার দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবও চেষ্টা করেছিলেন, তিনি কি সফল হয়েছেন? এরপর এরশাদ চেষ্টা করেছিল, শেখ হাসিনা চেয়েছিল; তারা কী পেরেছে? তাই সেদিকে না গিয়ে বাংলাদেশের জনগণের সিদ্ধান্ত তাদের দিতে দেন।

কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্নার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়নের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান।

এদিকে সকালে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া জিয়ানগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রথম সমাধিস্থলে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন যুবদলের নেতাকর্মীরা। সেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জিয়া পরিবারের অসামান্য অবদান রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না। 

তিনি বলেন, এই স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যুত্থানের প্রথম লগ্ন উচ্চারণ হয়েছিল জিয়াউর রহমানের কণ্ঠে। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছিলেন। রাজনৈতিক নেতৃত্বের ব্যর্থতাই যখন বাংলাদেশের মানুষ একটি অনিশ্চয়তা এবং অন্ধকার জীবনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে তখন সাহসী কণ্ঠ মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন।  

আব্দুল মোনায়েম মুন্না বলেন, জিয়াউর রহমানের অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত শাসনামলে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে পরিচিত করেছেন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে। অনেকেই জানে না ইরাক-ইরান যুদ্ধ বন্ধে তার অসামান্য অবদান রয়েছে। উনার কৃতিত্ব ও কীর্তির মাধ্যমে নিজেকে একজন ক্ষণজন্মা মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। প্রকৃত পক্ষে তিনি একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন। রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে মানুষের মনে স্থান করে নিয়েছেন। খাল কাটা কর্মসূচির মাধ্যমে স্বনির্ভর বাংলাদেশ এবং কৃষি বিপ্লব ঘটিয়েছেন। জনশক্তি রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদান। 

তিনি বলেন, এই চট্টগ্রামে শহীদ জিয়াউর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত রয়েছে। এ চট্টগ্রামের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক শেকড়ের।

এর আগে বিকেল সোয়া তিনটার দিকে কেন্দ্রীয় যুবদলের দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে নগরীর ষোলশহর ২ নম্বর গেট বিপ্লব উদ্যানে রং তুলিতে আঁকা স্বাধীনতার ঘোষণার চিত্র প্রদর্শনী করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন।

পরে দুপুরে নগরের কাজীর দেউরীর জিয়া স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে যুবদলের দিনব্যাপী কর্মসূচি হিসেবে এতিম শিশুদের অংশগ্রহণে কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। বিপ্লব উদ্যান থেকে উই রিভোল্ট বলে বিদ্রোহ করে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করেছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন, আবার অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন। তিনি দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্রে চট্টগ্রামের এই সার্কিট হাউসে শাহাদাতবরণ করেন। এই সার্কিট হাউসে শহীদ জিয়ার রক্ত মিশে আছে। শহীদ জিয়া আমাদের আবেগের জায়গা। সার্কিট হাউস শহীদ জিয়ার স্মৃতি বিজড়িত স্থান। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার দীর্ঘদিন ধরে সার্কিট হাউসে স্থাপিত জিয়া স্মৃতি জাদুঘরকে বন্ধ করে রেখেছিল। জাদুঘর থেকে শহীদ জিয়ার নাম মুছে দিয়েছিল। তারা জনগণের কাছ থেকে জিয়াকে আড়াল করতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা সফল হতে পারেনি। শহীদ জিয়ার নাম বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে। জিয়ার নাম লেখা যায়, মোছা যায় না। শহীদ জিয়া স্মৃতি জাদুঘর সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম সাইফুল আলম, শফিকুর রহমান স্বপন, মো. শাহ আলম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান, জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সহসভাপতি ও চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাবেক সহসভাপতি ও চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ মুন্না, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী জেলা যুবদলের সভাপতি মনজুরুল আজিম সুমন, সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জাহিদ হাসান, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহদপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভুঁইয়া, যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন, সাবেক উপজাতি বিষয়ক সম্পাদক ও রাঙ্গামাটি জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম, যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য সাইফুর রহমান শপথ, লক্ষ্মীপুর জেলা যুবদলের সদস্য সচিব হুমায়ুন কবির, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের সভাপতি মো. শাহজাহান, আমিনুল ইসলাম তৌহিদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ জসিম, সাধারণ সম্পাদক এস এ মুরাদ চৌধুরী প্রমুখ।

Read Entire Article