আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ‘সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী খায়রুল আহসান মারজান বলেন, একাধিক প্রার্থী প্রকাশ্যে আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেও নির্বাচন কমিশন কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে। এটি নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আমরা অবিলম্বে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে সাড়ে চারটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিন প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তিনি।
খায়রুল আহসান মারজান বলেন, দীর্ঘ ছয় বছর পর ডাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। শিক্ষার্থীরা আশা করেছিলেন, এবারের নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য। এবারের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিহাসের সর্বাধিক প্রার্থী অংশগ্রহণ করলেও নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতা ও প্রশাসনের নিরবতার কারণে নিরপেক্ষতা মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
- আরও পড়ুন:
- রোকেয়া হলে রাতে থাকা নিয়ে বিতর্ক, উমামার দুঃখ প্রকাশ
- নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে উচ্চপর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত
সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলের পক্ষ থেকে ছয়টি দাবি উত্থাপন করা হয়। সেগুলো হলো-
১. আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ:
একাডেমিক ভবনের সামনে ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা প্যানেল ব্যানার টাঙানো এবং রাতে মেয়েদের হলে প্রচারণা চালানোসহ একাধিক স্পষ্ট লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রদল ও শিবিরের প্রার্থীরাও ২৬ আগস্টের আগেই প্রচারণা চালিয়েছেন। এসব ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের নিরবতা উদ্বেগজনক।
২. লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ:
ক্ষমতাশালী ও অর্থশালী প্রার্থীদের কাছে কমিশনের দুর্বলতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। নিরপেক্ষতা নিশ্চিত না হলে নির্বাচন উৎসব নয়, প্রহসনে পরিণত হবে।
৩. ভোটকেন্দ্র বৃদ্ধি:
১৮টি হলের বিপরীতে মাত্র ৮টি ভোটকেন্দ্র পর্যাপ্ত নয়। বিশেষত কুয়েত মৈত্রী ও ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শিক্ষার্থীদের জন্য সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার ইনস্টিটিউটে অতিরিক্ত ভোটকেন্দ্র স্থাপনের দাবি জানানো হয়।
৪.নারী ভোটারদের নিরাপত্তা:
নারী ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং অনলাইন ক্যাম্পেইনে সাইবার বুলিং বন্ধে প্রশাসনকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।
৫. অবৈধ পোস্টার-ফেস্টুন অপসারণ:
ক্যাম্পাসজুড়ে ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে, কিন্তু প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ নেই। অবিলম্বে এসব সরাতে হবে।
৬. সন্ত্রাসীদের প্রার্থী হওয়া বন্ধ করতে হবে:
ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত জুলিয়াস সিজার ও তার সহযোগীদের প্রার্থী হওয়া অন্যদের জন্য নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করছে। অতীতে জুলিয়াস সিজারের হাতে শিক্ষার্থী ফরিদের ওপর নির্যাতনের উদাহরণ টেনে এনে তাদের মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ইয়াসিন আরাফাত, এজিএস পদপ্রার্থী সাইফ মুহাম্মদ আলাউদ্দিন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, সমাজসেবা সম্পাদক শাহরিয়ার আলম, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক মইনুল ইসলাম, ক্যারিয়ার ও উন্নয়ন সম্পাদক শান্ত মিয়া, সদস্য মোহাম্মদ এরফান, মোহাম্মদ ইকরামুল কবির, ইলিয়াস তালুকদারসহ অন্যান্য নেতারা।
এফএআর/এনএইচআর/এএসএম