আদানি ইস্যুতে ভারতের পার্লামেন্টে উত্তেজনা
সম্প্রতি মার্কিন আদালতে অভিযুক্ত হয়েছেন ভারতের ধনকুবের গৌতম আদানি। এরপর একের পর এক তার জালিয়াতির খবর সামনে আসছে। এমনকি ভারতের পার্লামেন্টে এ ইস্যুতে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) পার্লামেন্টে আদানির দুর্নীতি মামলা নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। এরপরই পার্লামেন্টে হট্টগোল শুরু হয়। এ সময় এমপিরা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তেজনা বাড়ার কারণে পার্লামেন্ট মুলতবি করা হয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বিশেষ করে কংগ্রেস আদানির সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সম্পর্ক নিয়ে সমালোচনা করে আসছে। তাদের দাবি, বিশ্ব দরবারে আদানির জন্য ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে।
কংগ্রেস সভাপতি বলেন, পার্লামেন্ট কেন মুলতবি করা হয়েছে তা আমি জানি না। আমরা কেবল আদানি ইস্যু উপস্থাপন করেছিলাম। গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে ঘুষ ও জালিয়াতিসহ বিভিন্ন গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ দিন আদানির বন্ডের দাম অনেকটাই কমে গেছে। কেননা বিনিয়োগকারী এবং ঋণদাতারা মামলার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন। মার্কিন আদালতের অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে তদন্ত সম্পর্কে জানার পরও ভারত জনগণকে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদানির বিরুদ্ধে ২৫০ মিলিয়ন ডলার ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ সংগ্রহের জন্য তা গোপন করেছেন। মূলত ঘুষের মাধ্যমে নিজের দেশে বিশাল এক সৌরশক্তির প্রকল্পে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আদানি প্রতারণা করেছেন।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আদানিসহ সাত অভিযুক্ত ব্যক্তি এ প্রকল্পের জন্য ভারতীয় কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে রাজি হয়েছিলেন। অভিযুক্তদের মধ্যে তার ভাতিজা সাগর আদানিও রয়েছেন। প্রকল্পটি থেকে তাদের ২০ বছরে ২০০ কোটি ডলার লাভের কথা ছিল। এর মাধ্যমে তারা ভারতের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করতে চলেছিলেন।
আদালতের নথির বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে গৌতম আদানি ও তার ভাতিজার বিরুদ্ধে বিচারক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। বিচারকরা এ পরোয়ানা বিদেশি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাছে হস্তান্তরের পরিকল্পনা করছেন।
প্রকিউটররা জানিয়েছেন, আদানি ও আদানি গ্রিন এনার্জির আরেক নির্বাহী ও সাবেক সিইও ভিনিত জৈন দুর্নীতির বিষয়টি গোপন করেছেন। এরপর তারা ঋণদাতা ও বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৩০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ ও বন্ড সংগ্রহ করেন।