গত জুলাই আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন। এতে পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক শিশুদের হত্যার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক শিশুদের হত্যা ও পঙ্গুত্ববরণের প্রমাণ মিলেছে। এছাড়া তাদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার, অমানবিক অবস্থায় আটক এবং অত্যাচার করা হয়েছে।
জাতিসংঘ ধানমন্ডিতে ১২ বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যুর বর্ণনা তুলি ধরেছে। এতে বলা হয়েছে, ধানমন্ডিতে একজন ১২ বছর বয়সী বিক্ষোভকারী প্রায় ২০০টি ধাতব গুলি ছোড়ার কারণে সৃষ্ট অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের কারনে মারা যান। এছাড়াও, নিহতদের মধ্যে ছিল খুব ছোট শিশু যাদের তাদের পিতামাতারা বিক্ষোভে নিয়ে গিয়েছিলেন অথবা যারা পথচারী হিসেবে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।
এতে নারায়ণগঞ্জের একটি ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে ছয় বছর বয়সী এক শিশু বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে একটি বিক্ষোভের সহিংস সংঘর্ষ প্রত্যক্ষ করার সময় মাথায় গুলির শিকার হয়েছিলেন।
প্রতিবেদনে বিক্ষোভের শেষ এবং সবচেয়ে প্রাণঘাতী দিন ৫ আগস্টের একটি ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। এ দিন আজমপুরে পুলিশের গুলিতে আহত ১২ বছর বয়সী ছেলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, পুলিশ সব জায়গায় বৃষ্টির মতো গুলি করছিল। তিনি অন্তত এক ডজন মৃতদেহ দেখতে পেয়েছিল বলেও প্রদিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনটি এমন ঘটনাগুলোও নথিভুক্ত করেছে, যেখানে নিরাপত্তা বাহিনী আহত বিক্ষোভকারীদের জরুরি চিকিৎসা সেবা প্রদান প্রত্যাখ্যান বা বাধাগ্রস্ত করেছে, রোগীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এবং হাসপাতালগুলো থেকে তাদের আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহ করেছে, চিকিৎসা কার্যে নিয়োজিত কর্মীদের ভয় দেখিয়েছে এবং হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ জব্দ করেছে, যা পরিষ্কারভাবে প্রকাশ করে যে, আইনানুগত প্রক্রিয়া ছাড়া বিক্ষোভকারীদের শনাক্ত করার এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সহিংসতার মাত্রা কোন পর্যায়ে ছিল তা গোপন করার চেষ্টা করা হচ্ছিল।