খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনারের অপসারণ দাবিতে এবার কলেজের সামনে ব্লকেড (অবরোধ) কর্মসূচি পালন করেছেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকেলে বিভিন্ন কলেজের সামনে ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ জনতার ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
আন্দোলনকারীদের ভাষ্য, খুলনার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ধারাবাহিক অবনতি ও শহরবাসীর নিরাপত্তাহীনতায় উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য দায়ী পুলিশ কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার। আমরা তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছি। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবকে এ বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। বিগত কয়েক মাসে খুলনায় একাধিক খুনের ঘটনা ঘটেছে। রাত-বেরাতে চলাফেরায় আমাদের কোনো নিরাপত্তা নেই। আমরা অদক্ষ এই পুলিশ কমিশনারের অপসারণ চাই।
সিটি কলেজের সামনে আন্দোলনকারী ইকরাম উদ্দিন বলেন, ‘প্রতিদিন কোনো না কোনো হামলা অথবা খুনের ঘটনা ঘটেই চলেছে খুলনা শহরে। পুলিশ কি কিছু দেখছেই না? তারা চুপ কেন? আমরা কমিশনারের অপসারণ চাই।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা জেলার সদস্য সচিব সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, ‘অযোগ্য পুলিশ কমিশনারের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। আমাদের আন্দোলনে সব শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নিয়েছেন।’
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলার অবনতির পেছনে কেএমপি কমিশনার দায়ী। আমরা তার অপসারণ চাই। আমাদের জানমালের রক্ষার্থে আমরা রাজপথ ছাড়বো না।
এর আগে, গত ২৪ জুন মারধর করে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সুকান্ত দাশকে খানজাহান আলী থানা পুলিশের কাছে তুলে দেন ফুলবাড়ি গেট এলাকার স্থানীয়রা। পরে রাতেই তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
সুকান্ত দাশকে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিবাদে ২৫ জুন দুপুর থেকে কেএমপি সদরদপ্তর ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে ছাত্র-জনতা। একপর্যায়ে তারা কেএমপির সদরদপ্তরের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।
আন্দোলনের মুখে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকালে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ ও চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের যৌথ চেষ্টায় চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থেকে সুকান্ত দাশকে গ্রেফতার করা হয়। তবে আন্দোলনকারীরা পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন চলমান রাখেন। এরপর শনিবার (২৮ জুন) সন্ধ্যা ৭টায় খুলনা প্রেস ক্লাবে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি পুলিশ কমিশনারের অপসারণের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অবগত করবেন বলেন আশ্বাস দেন আন্দোলনকারীদের। কিন্তু পুলিশ কমিশনারের অপসারণ না হলে আন্দোলনকারীরা রাজপথ না ছাড়ার ঘোষণা দেন তারা। যার ধারাবাহিকতায় সোমবার (৩০ জুন) বিকেল ৪টায় কেএমপির সামনের সড়ক অবরোধ ও মঙ্গলবার (১ জুলাই) রূপসা সেতু অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।
আরিফুর রহমান/এসআর/জেআইএম