আন্দোলনে নিহত শিমুলের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন
বগুড়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত দর্জি শ্রমিক শিমুল সরদারের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে শহরের নামাজগড় আঞ্জুমান-ই গোরস্তান থেকে এ মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
উত্তোলনের পর মরদেহ সুরতহাল করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। সেখানে ময়নাতদন্ত শেষে আবারও যথাযথভাবে মরদেহ দাফন করা হয়েছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তাসওয়ার তানজামুল হক।
তিনি জানান, আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য শিমুলের মরদেহ উত্তোলন করা হয়। সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত শেষে আবারও মরদেহ দাফন করা হয়েছে। এ সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং পুলিশের একাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
গত ৪ আগস্ট দুপুরে শহরের ঝাউতলা এলাকায় ছাত্র-জনতার একদফার আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন শিমুল সরদার। তিনি শহরের দক্ষিণ বৃন্দাবনপাড়ার দর্জি শ্রমিক ছিলেন। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শিমু বেগম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের ১৩৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে বগুড়ার তিনজন সাংবাদিককেও আসামি করা হয়।
তিন সাংবাদিক হলেন, ইনডিপেনডেন্ট টিভির উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি হাসিবুর রহমান বিলু, দৈনিক জনকণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার মাহমুদুল আলম নয়ন ও দৈনিক কালের কণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি জে এম রউফ।
নিহতের স্ত্রী শিমু বেগম এজাহারে উল্লেখ করেন, বগুড়া শহরের ঝাউতলা এলাকায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে এবং সাবেক এমপি মজিবর রহমান মজনু ও রাগেবুল আহসান রিপুসহ চারজনের নেতৃত্বে অন্য আসামিরা পিস্তল, কাটারাইফেল, আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ‘ছাত্র-জনতার’ মিছিলে হামলা চালান। তিন সাংবাদিকসহ এজাহারভুক্ত ৩৩ জন ককটেল ও পেট্রলবোমা হামলা করেন। তখন দর্জি শ্রমিক শিমুল সরদার ‘ছাত্র-জনতাকে’ রক্ষায় এগিয়ে যান। এ সময় বগুড়া শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান রবিন, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি টি জামান নিকেতা, পৌর কাউন্সিলর আরিফুর রহমান, আবদুল মতিনসহ অন্য আসামিরা গুলি ছোড়েন। বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে শিমুল সরদার মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তার মৃত্যু নিশ্চিত হলে হামলাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। পরে স্থানীয়রা শিমুলকে উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।