আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ায় প্রাথমিকের শিক্ষক নেতাকে শোকজ

তিন দফা দাবির পক্ষে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও প্রাথমিক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক মু. মাহবুবর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে।  মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জেছের আলী স্বাক্ষরিত নোটিশে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। নোটিশে উল্লেখ করা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের কয়েকটি সংগঠন তিন দফা দাবিতে গত ৭ নভেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। ঘোষণার পর ৭ থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত আপনি ও অন্যান্য সহকারী শিক্ষক শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। নোটিশে আরও বলা হয়েছে, আন্দোলন সরকারের দৃষ্টিগোচর হলে ১০ নভেম্বর সচিবালয়ে অর্থ সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা আপনিসহ শিক্ষক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে দাবি যুক্তিসংগত বিবেচনায় নিয়ে তা সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়। পরে একটি সরকারি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি হলে আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়। স

আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ায় প্রাথমিকের শিক্ষক নেতাকে শোকজ

তিন দফা দাবির পক্ষে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও প্রাথমিক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক মু. মাহবুবর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জেছের আলী স্বাক্ষরিত নোটিশে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের কয়েকটি সংগঠন তিন দফা দাবিতে গত ৭ নভেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। ঘোষণার পর ৭ থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত আপনি ও অন্যান্য সহকারী শিক্ষক শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।

নোটিশে আরও বলা হয়েছে, আন্দোলন সরকারের দৃষ্টিগোচর হলে ১০ নভেম্বর সচিবালয়ে অর্থ সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা আপনিসহ শিক্ষক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে দাবি যুক্তিসংগত বিবেচনায় নিয়ে তা সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়। পরে একটি সরকারি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি হলে আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়।

সবশেষে নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আপনি ও অন্যান্য শিক্ষক নেতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য ও উসকানিমূলক ভিডিও প্রকাশ করতে থাকেন। পাশাপাশি ১ ডিসেম্বর শুরু হওয়া তৃতীয় প্রান্তিক পরীক্ষা না নেওয়ার আহ্বান জানান। এসব ভিডিও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নজরে আসে এবং একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মচারী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে আপনাকে শোকজ করা হয়েছে।

দাবি আদায়ে প্রাথমিকের শিক্ষকরা গত ৯ নভেম্বর কর্মবিরতি শুরু করেন। এর আগের দিন ঢাকার শাহবাগে পুলিশের লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ এবং জলকামান ব্যবহারের ঘটনায় শতাধিক আন্দোলনকারী শিক্ষক আহত হয়েছিলেন। ওই ঘটনার পর চারটি শিক্ষক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দেয়।

দুদিন পর অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর আশ্বাস পেয়ে শিক্ষকরা কর্মবিরতি কর্মসূচি সাময়িক স্থগিত করেন। তবে দাবি পূরণ না হওয়ায় তারা আবারও আন্দোলনে নেমেছেন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সারা দেশে বর্তমানে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে তিন লাখ ৮৪ হাজারের বেশি শিক্ষক কর্মরত। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই সহকারী শিক্ষক।

প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বর্তমানে দশম গ্রেডে উন্নীত হয়েছেন। তবে সহকারী শিক্ষকরা ১৩তম গ্রেডে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। তারা এ নিয়ে অসন্তুষ্ট। গ্রেড উন্নীতকরণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। এতে গত ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া বার্ষিক পরীক্ষা বিঘ্নিত হচ্ছে।


 

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow