আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণে নোবিপ্রবিতে স্মরণসভা
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণে সভা ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে স্মরণসভা ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ এফ এম আরিফুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক। বক্তব্য দেন ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর সরকার।
নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ্-আল-ফারুক, নোবিপ্রবি পরিকল্পনা উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের শাখা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল কাদের। নোবিপ্রবি শিক্ষার্থী মো. জানে আলম ও জান্নাতুল ফেরদাউস ইরার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোালনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুদ।
অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতা জীবন বাজি রেখে রাজপথে লড়াই করেছে। এর মধ্যে অনেক তাজা প্রাণ ঝরে গেছে স্বৈরাচারের গুলির আঘাতে। শত মায়ের বুক খালি হয়েছে। হাজারো মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। এত এত ত্যাগের লক্ষ্য ছিল একটাই সুন্দর একটি বাংলাদেশ। যেখানে আমরা মুক্তভাবে প্রাণখুলে নিজেদের অব্যক্ত কথাগুলো নির্ভয়ে প্রকাশ করতে পারব। যে কথাগুলো হবে, ন্যায় ও সত্যের পক্ষে এবং শোষণ, বঞ্চনা, বৈষম্য, ঘুষ, মাদকসহ সকল অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে।
তিনি আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা যে পরিবর্তিত নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি সেখানে শ্রেণি বৈষম্যের কোনো ঠাঁই নেই। এখানে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানসহ সকল ধর্মের মানুষ সম্প্রীতিমূলক পরিবেশে বাস করবে। ন্যায়ভিত্তিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ব্যক্তি পর্যায় থেকে রাষ্ট্র পর্যন্ত প্রত্যেকের নিজস্ব দায়িত্ব পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা গুণগত উচ্চশিক্ষা ও মানসম্মত কর্মপরিবেশের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি।
নোবিপ্রবির ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের তত্ত্বাবধানে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত হয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রাণ হারানো নোয়াখালী অঞ্চলের শহীদদের বাবা-মা ও আহত নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে নোবিপ্রবি বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত দেয়ালিকা প্রদর্শনী, আহত পরিবারকে সম্মাননা প্রদান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শহীদদের পরিবারের সদস্যরা, আহত শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউট পরিচালক, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, দপ্তর প্রধানসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং দপ্তরসমূহের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা অংশ নেয়।