আপনারা মৃত্যু ঘোষণা করলেই মরে যাওয়ার চেষ্টা করব : নচিকেতা

দুই বাংলার গানের জগতে প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর বললেই যার নাম সবার আগে উঠে আসে—তিনি নচিকেতা চক্রবর্তী। সময়ের অন্যায়, সামাজিক অসংগতি আর সাধারণ মানুষের কথা অকপটে গানে তুলে ধরে যিনি হয়ে উঠেছেন প্রজন্মের কণ্ঠ। নব্বই দশক থেকে আজ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে শ্রোতাদের হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়া এই জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আবারও আলোচনায় উঠে এলেন সম্প্রতি নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে এক ভিডিও ও লেখা শেয়ার করে। যা নিয়ে ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে আলোচনা। ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন জীবনমুখী গানের কিংবদন্তি নচিকেতা চক্রবর্তী। চিকিৎসকদের প্রচেষ্টায় হার্টে দুটি স্টেন্ট বসানোর পর এখন অনেকটাই সুস্থ ওপার বাংলার এই গায়ক। ভক্তরা যখন তার ফিরে আসায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন, ঠিক তখনই সোশ্যাল মিডিয়ায় নচিকেতার একটি ভিডিও ও দীর্ঘ লেখা নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেল ফেসবুকে ভিডিও বার্তার ক্যাপশনে সংগীত শিল্পী লিখেছেন, ‘মৃত্যু মস্ত ফাঁকি’।  নিজের জীবনের উপলব্ধি থেকে নচিকেতা সেই বার্তায় উল্লেখ করেন, মৃত্যুর মুখ থেকে বারবার ফিরতে মন্দ লাগছে না। কিন্তু এই প্রথম

আপনারা মৃত্যু ঘোষণা করলেই মরে যাওয়ার চেষ্টা করব : নচিকেতা

দুই বাংলার গানের জগতে প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর বললেই যার নাম সবার আগে উঠে আসে—তিনি নচিকেতা চক্রবর্তী। সময়ের অন্যায়, সামাজিক অসংগতি আর সাধারণ মানুষের কথা অকপটে গানে তুলে ধরে যিনি হয়ে উঠেছেন প্রজন্মের কণ্ঠ। নব্বই দশক থেকে আজ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে শ্রোতাদের হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়া এই জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আবারও আলোচনায় উঠে এলেন সম্প্রতি নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে এক ভিডিও ও লেখা শেয়ার করে। যা নিয়ে ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে আলোচনা।

ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন জীবনমুখী গানের কিংবদন্তি নচিকেতা চক্রবর্তী। চিকিৎসকদের প্রচেষ্টায় হার্টে দুটি স্টেন্ট বসানোর পর এখন অনেকটাই সুস্থ ওপার বাংলার এই গায়ক। ভক্তরা যখন তার ফিরে আসায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন, ঠিক তখনই সোশ্যাল মিডিয়ায় নচিকেতার একটি ভিডিও ও দীর্ঘ লেখা নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেল ফেসবুকে ভিডিও বার্তার ক্যাপশনে সংগীত শিল্পী লিখেছেন, ‘মৃত্যু মস্ত ফাঁকি’। 

নিজের জীবনের উপলব্ধি থেকে নচিকেতা সেই বার্তায় উল্লেখ করেন, মৃত্যুর মুখ থেকে বারবার ফিরতে মন্দ লাগছে না। কিন্তু এই প্রথমবার নয়, মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাইক থেকে পড়ে গিয়ে মাথায় লেগে কোমায় চলে গিয়েছিলেন তিনি। ২০ বছর বয়সে শুধুমাত্র ভাগ্যের কারণে মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফিরেছিলেন নচিকেতা। শেষ মুহূর্তে স্থান পরিবর্তনের কারণে পুলিশের গুলি এসে লাগে বন্ধুর বুকে।

মাত্র ১৬ বছর বয়সে পাতাল রেলের নির্মিত হওয়া টানেলে জলে ডুবতে ডুবতে বেঁচে গিয়েছিলেন নচিকেতা। এর আগে মাত্র ৭ বছর বয়সে ক্ষুদিরামের ছবি দেখে গলায় দড়ি দিতে গিয়েছিলেন তিনি, মাত্র ৬ বছর বয়সে নকশাল আন্দোলন দেখে স্কুলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলেন, সেবারও বেঁচে গিয়েছিলেন গায়ক।  

এরপর ৪৭ বছর বয়সে দিল্লির হাসপাতালে সার্জারির টেবিল থেকে বেঁচে ফিরেছিলেন এবং ২০২৫ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েও বেঁচে যান তিনি।

নচিকেতা লিখেছেন, ‘আমার লেখা যদি ভালো লাগে ভালো না হলে কমেন্ট করবেন না। আপনাদের কমেন্টের আশায় আমি বসে নেই। নিজেকে আমার বাড়ির পুরনো তক্তপোশের মতো জরাজীর্ণ প্রমাণ করতে গিয়ে কমেন্ট করবেন না। আবারও বেঁচে এলাম, হয়তো ভুল হয়ে গেছে ক্ষমা করবেন। এবার আপনারা মৃত্যু ঘোষণা করলেই কথা দিচ্ছি মরে যাওয়ার চেষ্টা করব। অন্তত আপনাদের মান রাখতে।’ 

সব মিলিয়ে কথা শুনে বোঝাই যায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই নচিকেতার মৃত্যু নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যেভাবে হইচই পড়ে গিয়েছিল তাতেই হয়তো ক্ষুব্ধ তিনি। মূলত, নচিকেতার মৃত্যুর খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ায় বেশ আশাহত হয়েছেন ৬১ বছর বয়সী এই সংগীতশিল্পী, আর তাই নিজের ওই অভিমান থেকেই এতগুলো কথা লেখেন তিনি।

কিন্তু সময় বদলালেও নচিকেতা চক্রবর্তীর গান ও বক্তব্য আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক শ্রোতাদের নিকট। প্রতিবাদী কণ্ঠ, স্পষ্ট অবস্থান আর সুরের মাধ্যমে সমাজের আয়না ধরে রাখার যে দায় তিনি নিয়েছেন, তা সহজে ম্লান হওয়ার নয়। এই কারণেই প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে নচিকেতা শুধু একজন সংগীতশিল্পী নন, তিনি এক চেতনার নাম। 

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow