‘আবারও কেউ স্বৈরাচারী হলে ছাত্র-জনতা তাদেরও প্রতিহত করবে’

4 hours ago 7
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, এই বাংলাদেশে স্বৈরাচারের ভূমিকায় আবারও কেউ আসীন হলে ছাত্র-জনতা তাদেরও প্রতিহত করবে। দীর্ঘদিন জনগণকে রাজাকারের ভুয়া গল্প শুনিয়ে আজ আওয়ামী লীগ দেশ থেকে নিজেরাই পালাতে বাধ্য হয়েছে। এই নতুন বাংলাদেশে অধিকারের কথা বললে আর কোনো অপবাদ, ট্যাগ লাগিয়ে কথা বলার সুযোগ কারও নেই। তিনি বলেন, মানুষের ন্যায়সঙ্গত অধিকারের কথা বললেই কেন জামায়াত-শিবিরের কথা টেনে আনা হয়? অধিকারের প্রশ্ন তুললে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব অটুট রাখার কথা বললে, আপনি কেন বিরোধী তকমা দিয়ে থামিয়ে দেবেন? সেই মিথ্যাচারের দিন বাংলাদেশ থেকে শেষ হয়ে গেছে। রোববার (১২ জানুয়ারি) মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্র আয়োজিত সংলাপে ঢাকার রায়ের বাজার হাইস্কুল মাঠে রক্তিম জুলাই ২৪-এ ঐতিহাসিক বিজয়ের পর তরুণদের কল্পনায় একটি নতুন বাংলাদেশ র্শীষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সংলাপে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, আমার বাংলাদেশ পার্টির সহকারী সদস্য সচিব ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সেক্রেটারি রাশেদ খান, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। অনুষ্ঠানটি মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্র মহাসচিব মাহবুল হকের সভাপতিত্বে বিভিন্ন পর্যায়ের মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিগণ সংলাপে অংশ নেন। ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ছাত্র যুবকরা স্লোগান দিয়েছে, ‘আমার ভাই কবরে খুনি কেন বাহিরে’, সুতরাং অনতিবিলম্বে তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। আমরা দেখছি জুলাই বিপ্লবের খুনিদের নিজ দেশে রেখে আশ্রয় দিচ্ছে ভারত। সেখানকার কংগ্রেসের একজন নেতা দম্ভ করে বলেছে, ‘শেখ হাসিনা ভারতকে যা দিয়েছে, তার জন্য সে যতদিন বাঁচবে, তাকে ভারত সরকারের আশ্রয় দেওয়া উচিত।’ এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলি, ভারত একটি রাষ্ট্র নয় বরং সন্ত্রাসীদের আশ্রয় মদতদাতা ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে। কারণ, বাংলাদেশের চিহ্নিত একজন সন্ত্রাসী মাফিয়াদের যারা আশ্রয় দেয়, তারাও সন্ত্রাসী। ভারতের জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা সচেতন হোন, দেশের সম্মান রক্ষার স্বার্থে আন্দোলন করুন, কোনো সন্ত্রাসীকে ভারতে আশ্রয় দেবেন না। জুলাই বিপ্লবে আমাদের ছাত্র-জনতার প্রতিটা স্লোগান ছিল দেশ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে দৃঢ় করার অঙ্গীকার। মানবাধিকার উন্নয়ন সংগঠনকে আমরা এই সুন্দর সংলাপ আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানাই। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে অর্থবহ করতে হলে নতুন প্রজন্মের তরুণ যুবকদের মেধাবী, সৎ ও দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে জানিয়ে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আমি মনে করি ২০২৪-এর জুলাই বিপ্লবের ওপর আগামীতে গবেষণা হবে। আমাদের এই ছাত্র-জনতার এসব স্লোগান ধারণ করে ইতোমধ্যেই সিরিয়ায় বিপ্লব হয়েছে। পৃথিবীর নানা দেশে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার জুলাই বিপ্লব সামনে রেখে সমস্ত জুলুম কায়েম হওয়া রাজ্যগুলোতে মুক্তির আন্দোলন-সংগ্রাম চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, আবার স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী আমাদের আবার যদি কেউ ১৯৭১ বিতর্ক এবং ২০২৪ এর মন্তব্য নিয়ে ষড়যন্ত্র করেন, তাহলে দেশবাসী আপনাদেরই প্রত্যাখ্যান করবে। আধিপত্যবাদ ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা পালন করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী সত্যিকার দেশপ্রেমিক সংগঠন হিসেবে সব সময় দেশের মানুষের পাশে রয়েছে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষা ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত রয়েছে।
Read Entire Article