আবু সাঈদ ও মুগ্ধর নামে শিক্ষাবৃত্তি চালু হচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে  

4 hours ago 2

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদ ও মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর নামে শিক্ষাবৃত্তি চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর খিলগাঁও মডেল কলেজে আয়োজিত নবীনবরণ, কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান।

অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, শুধু দলাদলিতে আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরাট ক্ষতি হয়ে গেছে। এই ক্ষতি অপূরণীয়। আমাদের শিক্ষার মান ও শিক্ষকদের জীবনযাত্রা পরিবর্তনের জন্য যা যা প্রয়োজন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সবই করবে, শুধু আপনাদের প্রতি অনুরোধ, আপনারা দলাদলি করে শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষতি করবেন না। 

তিনি বলেন, একট কথা ভেবে দেখুন, উন্নত বিশ্বের কথা বাদই দিলাম, আমাদের প্রতিবেশীদের দিকে তাকান। তারা কত এগিয়ে গেছে। অথচ আমরা কোথায় পড়ে আছি। কেন আমাদের এ অবস্থা? কেন স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও আমরা এভাবে পরে রইলাম? কেন স্বাধীনতার ৫৪ পরও আমাদের আরেকটা লড়াই করা লাগে? আমরা আর কত শহীদ হবো, কত ফাইট করব?

এ সময় জুলাই আন্দোলনে যারা আত্মত্যাগ করেছেন, যারা আহত হয়েছেন, তাদের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, শত শত বছর ধরে এ  দেশের তরুণরা, ছাত্ররা মুক্তির পথ দেখিয়েছে। ছাত্রদের আত্মত্যাগ ও জাতীর প্রতি তাদের অবদান স্মরণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ আবু সাঈদ ও মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর নামে শিক্ষাবৃত্তি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

উপাচার্য বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু করেছি। আমরা বলতে চাই, এতদিন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় যেভাবে চলেছে, এখন আর সেভাবে চলবে না। আগামী মে মাস থেকেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া আর ভর্তি হওয়া যাবে না। আমরা সব বিভাগের শিক্ষার্থীর জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষাদানের পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষারও ব্যবস্থা করছি যেন, কোনো অবস্থাতেই আমাদের শিক্ষার্থীদের বেকার না থাকতে হয়। দেশে বিদেশে তারা যেন সম্মানের সঙ্গে ভালো উপার্জন করতে পারেন।

‘আমরা চাই আমাদের ছেলেমেয়েরা নিজেদেরকে যোগ্য করে তুলুক, মানুষের মতো মানুষ হোক। আর এজন্য প্রয়োজন দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সেই উদ্যোগই নিয়েছে। আসলে জাতিকে এগিয়ে নিতে হলে মানবসম্পদে রূপান্তরিত হতে হবে। শুধু রাস্তা, ব্রিজ দিয়ে মানুষের মন জয় করা যায় না, ইতোমধ্যে আপনারা দেখেছেন,’ যোগ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দিতে গিয়ে খিলগাঁও মডেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইমাম জাফর নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, খিলগাঁও মডেল কলেজে আমি তোমাদের স্বাগত জানাচ্ছি। যারা ধৈর্য ধরে, পরিশ্রম করে, তারা অনেক বড় হয় জীবনে। আমাদের শিক্ষকদের সবাই খুব যোগ্য, মেধাবী ও নিবেদিতপ্রাণ। তোমাদের সহযোগিতা করতে তারা সবসময় প্রস্তুত। আমি চাই তোমরা যেন এখান থেকে লেখাপড়া করে নিজেদের জীবন গড়তে পারো।

এ সময় তিনি নবীন শিক্ষার্থীদের যুগোপযোগী দক্ষতা, সৃজনশীলতা ও আচরণের ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি আমার ছেলেমেয়েরা প্রত্যেকে মানবিক মানুষ হবে। তারা তাদের যোগ্যতা ও পরিশ্রম দিয়ে দেশে ও জাতির উন্নতিতে অবদান রাখবে। হাজারো ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে যে নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু করেছে, সেই বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে শহীদদের রক্তের প্রতিদান দেবে।

অধ্যক্ষ বলেন, তোমাদের অভিভাবকদেরও ধন্যবাদ দিতে চাই। তারা তোমাদের পড়াশোনার জন্য এই প্রতিষ্ঠানকে বেছে নিয়েছেন। এখন আমি তাদের অনুরোধ করব, আপনারা আপনাদের সন্তানদের পড়াশোনা সফলভাবে শেষ হওয়া পর্যন্ত সহযোগিতা করবেন। তারা যেন মাঝপথে ঝরে না পড়ে। 

কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি চৌধুরী মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে কলেজের বিদ্যুৎসাহী সদস্য মাহফুজুর রহমান মাহফুজ, হিতৈষী সদস্য মামুনুর রশীদ আখন্দ, শিক্ষক প্রতিনিধি কে এম নাহিদ হাসান, ১নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি এম জামান ছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

Read Entire Article