আমরা গডফাদার-মাফিয়াতন্ত্রের বাংলাদেশ দেখতে চাই না : ডা. শফিকুর রহমান
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা আর গডফাদার, গড মাদার কিংবা মাফিয়াতন্ত্রের বাংলাদেশ দেখতে চাই না, ফ্যাসিবাদের বাংলাদেশ দেখতে চাই না।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে পঞ্চগড় চিনি কল মাঠে আয়োজিত জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, কীসের সংখ্যালঘু আর কীসের সংখ্যাগুরু, এদেশে যেই জন্ম নিয়েছে, সেই এদেশের গর্বিত নাগরিক। আমরা নাগরিকদের ভাগ-বাটোয়ারা কোনো ধর্ম বা দলের ভিত্তিতে করার পক্ষে নয়। অতীতের পতিত স্বৈরাচারী জাতিকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে মুখোমুখি লাগিয়ে রেখেছিল। যে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারে না, সে দেশের মানুষ মাথা সোজা করে বিশ্ব দরবারে সম্মানের সঙ্গে দাঁড়াতে পারে না। স্বাধীনতার ৫৪ বছর গেল, আর কতদিন আমাদের টুকরো টুকরো করা হবে। আমাদের স্পষ্ট ঘোষণা আমরা কোনো মেজরিটি বা মাইনরিটি মানি না।
২০২২ সালের পঞ্চগড়ে ভয়াবহ নৌকাডুবির ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের নিহত ৭২ জনের পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশে জামায়াত আমির বলেন, তোমাদের আমরা আমাদের পরিবারের সদস্য হিসেবে ধারণ করলাম। যতদিন বেঁচে থাকি, সেই ফিলিংস নিয়ে বেঁচে থাকব ইনশাআল্লাহ। আমরা বাংলাদেশকে একটি মানবিক বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দুনিয়ার সব দেশ- আমরা একই বিশ্ব সভার সদস্য। ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী। আমরা আমাদের প্রতিবেশীকে অহেতুক কষ্ট দিতে চাই না। তবে আমাদের প্রতিবেশীও যাতে আমাদের ওপর এমন কিছু চাপিয়ে না দেয়, যা বাংলাদেশের মানুষের জন্য সম্মানজনক নয়। যদি এরকম তারা কিছু করে, দেশের স্বার্থে আমরা সেদিন ভূমিকা পালন করতে কারো চোখের দিকে তাকাবো না। আমরা বিবেকের দিকে তাকিয়ে, বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকে দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য হব।
বক্তব্যের শেষ দিকে তিনি দেশ গড়ার কাজে সবাইকে পাশে থাকার আহ্বান জানান। সবার বুকের মধ্যে একটু ভালোবাসা আর সমর্থন চান। পরে ডা. শফিকুর রহমান পঞ্চগড় সার্কিট হাউজে স্থানীয় জামাতের নারী সদস্য এবং বিশিষ্টজনদের সঙ্গে পৃথক মতবিনিময়ের পর তিনি নীলফামারীর ডোমারের উদ্দেশে রওনা দেন।
পঞ্চগড় জেলা জামাতে ইসলামীর আমির ইকবাল হুসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় পঞ্চগড় জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি, খেলাফত মজলিশ পঞ্চগড়ের সভাপতি মীর মোর্শেদ তুহিন, বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট পাটির সভাপতি মাসুদুর রহমান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি জাপার সভাপতি ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান, জামায়াতে ইসলামের কেন্দ্রীয়, আঞ্চলিক ও স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারাসহ রতন চন্দ্র রায় নামে সনাতন ধর্মের স্থানীয় একজন বক্তব্য দেন। জনসভায় যোগ দিতে সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মী ও সমর্থকরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জড়ো হন। জেলার বাইরে থেকেও নেতাকর্মী ও সমর্থকদের জনসভায় অংশ নিতে দেখা যায়।