আমলাতন্ত্রের সঙ্গে সংঘাত নয়, আমলাদের কাজ কমিয়ে দেওয়া হবে

3 hours ago 4

বিএনপি সরকারে গেলে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এড়াতে আমলাদের কাজ কমিয়ে দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, আমলাতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ করার কিছু নেই। আমলাতন্ত্রের সঙ্গে সংঘাত না করে তাদের দায়িত্ব কমিয়ে দিতে হবে। আমলাতন্ত্রের হাতে সব দায়িত্ব দেওয়ার দরকার নেই।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে ইকোনমিক রিফর্ম সামিট-২০২৫ এর প্রথম দিনের প্রথম সেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

একশনএইড ও বিডিজবস ডটকমের সহযোগিতায় দুদিনব্যাপী এ সামিট যৌথভাবে আয়োজন করে নাগরিক কোয়ালিশন, ইননোভেশন, ফিনটেক সোসাইটি, বিআরএআইএন ও ভয়েস ফর রিফর্ম। অর্থনীতিবিদ মাসরুর রিয়াজ, হিসাববিদ স্নেহাশীষ বড়ুয়া, চালডালের সিইও ওয়াসিম আলিম ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা পরিচালক ড. মনজুর হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

আমীর খসরুর বক্তব্যের আগে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হাসিবুদ্দিন হোসেন প্রশ্ন করেন—রাজনৈতিক সরকার কীভাবে আমলাতান্ত্রের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে।

জবাবে আমীর খসরু বলেন, আমলাতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ করার কিছু নেই, অ্যাকাউন্টেবল করারও বেশি কিছু নেই। যদি আমরা তাদের দায়িত্বগুলো কমিয়ে দিই, তাদের কাজটা কমিয়ে দিই তাহলেই হবে। আমলাতন্ত্রের হাতে সব দায়িত্ব দেওয়ার দরকার নেই।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের আমলাতন্ত্রের মূল কাজ হওয়া উচিত নীতি বাস্তবায়ন করা, নীতি তৈরি করা নয়। এ দুই ভূমিকার মিশ্রণ দীর্ঘদিন ধরে কার্যকারিতা ও জবাবদিহিকে ব্যাহত করছে। আমলাতন্ত্রের সঙ্গে সংঘাত নয়, বরং তাদের কাজকে সহজ করা দরকার। দায়িত্ব নির্দিষ্ট করে দেওয়া ও বাস্তবায়নের লক্ষ্য স্পষ্ট করা হলে দক্ষতা বাড়বে।

সাবেক এ বাণিজ্যমন্ত্রী তার মেয়াদকালের উদাহরণ টেনে বলেন, আমার সময়ে ইউটিলাইজেশন ডিক্লারেশন (ইউডি) সার্টিফিকেট ইস্যুর দায়িত্ব বাণিজ্য উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) কাছ থেকে বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) হাতে দেওয়া হয়। তখন এর বিরোধিতা হয়েছিল, কারণ এর সঙ্গে অর্থ ও ক্ষমতা জড়িত ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এ পদক্ষেপ দুর্নীতি কমিয়েছে ও কার্যকারিতা বাড়িয়েছে।

তিনি বলেন, রপ্তানিকারকদের অভিযোগ ছিল—সার্টিফিকেট নিতে দুর্নীতি ও বিলম্বের মুখে পড়তে হয়। বিজিএমইএকে দায়িত্ব দেওয়ার পর সেই সমস্যা দূর হয়েছে, এখন পর্যন্ত বেসরকারি খাত সফলভাবে এটি পরিচালনা করছে।

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এ ধরনের আরও কাজ ব্যবসায়ীদের দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন আমীর খসরু।

বাণিজ্য সংগঠনগুলোর উদ্দেশ্য তিনি বলেন, আপনারা প্রস্তুত হন। আপনাদের সক্ষমতা বাড়ান। আমরা সরকার গঠন করতে পারলে এ ধরনের কাজ আপনাদের দেওয়া হবে, যেন আপনারা স্ব-নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।

সামিটের প্রথম দিন সকালে ‘বিনিয়োগের বাধা দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার’ শীর্ষক প্রতিবেদন তুলে ধরেন সিএফএ অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আসিফ খান।

আলোচনায় মাসরুর রিয়াজ বলেন, আমাদের কোনো বিনিয়োগনীতি নেই। পরিবেশনীতি আছে, আইসিটিনীতি আছে, কৃষিনীতি আছে। বিনিয়োগে কোনো নীতিমালা না থাকায় আমরা বিনিয়োগের গুরুত্ব বুঝতে পারি না। এর দীর্ঘমেয়াদি মালিকানাও নিশ্চিত করতে পারি না। এজন্য কোনো নীতি দীর্ঘমেয়াদি হচ্ছে না।

বিনিয়োগনীতি ছাড়া বিডা ও বেজাকে বিনিয়োগ আনতে চাপ প্রয়োগ করা ‘অন্ধকারে ঢিল ছোড়ার মতো’ জানিয়ে তিনি বলেন, বিনিয়োগ প্রচারের কৌশল নেই। পাঁচ বছরের জন্য যদি বিনিয়োগনীতি করা হয় সেটিকে জাতীয় বাণিজ্য কৌশলনীতির সঙ্গে সমন্বিত করতে হবে। যদিও বাংলাদেশের কোনো বাণিজ্যিক কৌশল নীতিমালাও নেই।

প্রথাগত ব্যবসায় বিনিয়োগ করার অভ্যাস থেকে বেরিয়ে এসে তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি কিংবা ফিনটেকে বিনিয়োগের আহ্বান জানান ড. মনজুর হোসেন।

এসএম/এমকেআর/জিকেএস

Read Entire Article