পাশের বিল্ডিংয়ে একটা বাচ্চা থাকে। জানালা খুললেই তার ঘরটা দেখা যায়। একদিন হঠাৎ সে জানালা খুলে ডাকাডাকি শুরু করলো। ‘এই! তুমি কি এই বাসাতেই থাকো? আমার বন্ধু হবা?’
বাচ্চাটির কথা শুনে প্রথমে থতোমতো খেয়ে গেলাম। ছোট মানুষ, তাই নিজেকে সামলে নিয়ে আলতো করে কথা বললাম। জানলাম, সে ক্লাস ওয়ানে পড়ে। তার আব্বু-আম্মু দুজনেই চাকরি করেন। স্কুলে তার কোনো বন্ধু নেই, আর তার মা না কি কারও সঙ্গে মিশতে দেয় না। বাসায় আছে দাদা-দাদু, কিন্তু তারাও না কি খুব একটা কথা বলেন না।
সেদিন জানালার ওপারে দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ গল্প হলো আমাদের। এরপর দুই দিন আর কথা হলো না। তৃতীয় দিনে জানালা খুলে দেখি, আমার দিকে কাগজ উড়ছে!
ওই বাসা থেকে সে একটার পর একটা কাগজে লিখে পাঠাচ্ছে— ‘তুমি কথা বলবা আমার সাথে? আমার কেউ নাই, কেউ কথা বলে না! তুমি তো বন্ধু, তাই না?’
কথাগুলো পড়ে বুকটা কেমন মোচড় দিয়ে উঠলো। এইটুকু একটা বাচ্চা, যার মা-বাবা ব্যস্ততায় ডুবে, বাসার কেউ সময় দেয় না, স্কুলেও বন্ধু নেই। শুধু একটু কথা বলার জন্য সে এমন পাগলামি করছে!
ভাবা যায়? একটা শিশুর পৃথিবী কত ছোট, আর সেই ছোট পৃথিবীতেও যদি ভালোবাসা না থাকে— তাহলে সে কতটা নিঃসঙ্গ হয়!
তাই বলি, আপনারা আপনাদের বাসার বাচ্চাগুলোকে একটু সময় দিন, তাদের কথা শুনুন, তাদের যেন কখনো মনে না হয়—
‘আমার কেউ নেই।’
এমআরএম/জেআইএম

14 hours ago
6









English (US) ·