পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলায় চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছেন নাসরিন (১৬) নামে এক নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। (১৯ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার শেখমাটিয়া ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে নিজ ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে ওই শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেন।
মৃত্যুর আগে তিনি দেড় পৃষ্ঠার একটি হৃদয়বিদারক চিরকুট লিখে গেছেন, যেখানে পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিজের ব্যর্থতার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
নিহত নাসরিন রঘুনাথপুর গ্রামের দীনমজুর এসকেন্দার মিয়ার মেয়ে এবং হক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
ওই শিক্ষার্থীর ভাগিনা বলেন, সে মারা যাওয়ার কারণ খাতায় লিখে গেছে। আমরা পড়েছি, একটা ছেলের সঙ্গে তার দীর্ঘদিন সম্পর্ক ছিল। সেই ছেলে বিয়ের প্রত্যাশা দিয়া তার সাথে সম্পর্ক করেছে। এখন সে বিয়ে করতে রাজি হচ্ছে না। এজন্য নাসরিন গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছে। যে ছেলেটির সাথে সম্পর্ক করতো সে এক নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা, তার নাম পান্না শিকদার। বাবার নাম লতিফ সিকদার। আমি দুপুর একটার দিকে খবর পেয়ে দোকান থেকে এসে দেখি মারা গেছে। আপনারা এমন একটি প্রতিবেদন করবেন যেন সুষ্ঠু বিচার হয় আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। পরে স্থানীয়রা ছুটে এসে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
ওই শিক্ষার্থীর ভাবি জানান, ওই ছেলেটি ওকে ডিস্টার্ব করার কারণে অনেক দিন স্কুলে যেতে পারেনি। অনেক খারাপ খারাপ কথা বলেছে। ওকে বিবাহ করবে না বলায় ও এই আত্মহত্যা করেছে। আমরা এর বিচার চাই।
চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আমার মরার কারণ হলো লতিফ সিকদারের একমাত্র ছেলে পান্না শিকদার। সে আমাকে বিয়ের কথা বলে আমার দেহ ভোগ করেছে। আমার শেষ ইচ্ছা ও এমন সাজা হোক যেন আমার মত আর কারো জীবন না নষ্ট করতে পারে। বাবা এবং ভাই ও বোনের পারলাম না তোমাদের কথা রাখতে। আমাকে মাফ করে দিও। আমি বিয়ে করলেও কোনো দিন সুখী হতাম না। আমি তো এমনিতে জাহান্নামি। আর মা আমি তো! কি হয়েছে। আরও তো ভাই বোন আছে। আমাকে বিয়া দিবানা মনে করবা আমি শ্বশুর বাড়ি। কান্না করবা না একটুও। আমার বুকে না অনেক কষ্ট। তাই আর সহ্য করতে পারলাম না। পান্নার জন্য কি না করছি কিন্তু ও মিথ্যা অপবাদ দিলো। আমি না সারা বেডার সাথে কথা কই। তাই হলে ওর কাছে বারবার যেতাম না। বিদায় সবাই ভালো থাকো। ওর জন্য আমার অনেক কথা শুনতে হয়েছে। আমি ওর উচিত শিক্ষা চাই।’
এ বিষয়ে নাজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদ আল ফরিদ ভূঁইয়া জানান, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন।
মো. তরিকুল ইসলাম/এমআরএম