বার্বাডোজে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে টিভি আম্পায়ার অ্যাড্রিয়ান হোল্ডস্টকের কিছু সিদ্ধান্তের সমালোচনা করায় ম্যাচ ফি’র ১৫ শতাংশ জরিমানা ও একটি ডিমেরিট পয়েন্ট পান ওয়েস্ট ইন্ডিজের হেড কোচ ড্যারেন স্যামি।
ক্যারিবিয়ান কোচের চোখে বিতর্কিত সেই হোল্ডস্টোকই গ্রেনাডায় দ্বিতীয় টেস্টে পালন করবেন অন-ফিল্ড আম্পায়ারের দায়িত্ব। বিষয়টি কি স্বাভাবিকভাবে নিতে পারবেন স্যামি?
ভক্তদের কেউ কেউ হয়তো স্যামির প্রতিবাদ দেখার অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু তার কিছুই হয়নি। বরং উদার মনের পরিচয় দিয়েছেন ক্যারিবীয় কোচ। জানিয়েছেন, তিনি ক্ষোভ পুষে রাখেন না। অতীত নিয়ে ভাবতে চান না। হোল্ডস্টকের প্রতি কোনো বিরাগও পোষণ করছেন না।
স্যামি বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, আমি চাইনি আমার খেলোয়াড়রা সেই সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিক। কারণ আমি জানতাম কী ধরনের প্রশ্ন তাদের সামনে আসতে পারত। আমি যা বলেছি, তাতে আমি বিশ্বাস করতাম। আমরা পরে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আরও আলোচনা করেছি। কিছু বিষয়ে তারা ব্যাখ্যা দিয়েছেন এবং কিছু ভুল স্বীকারও করেছেন। তবে বার্বাডোজের সেই অধ্যায় এখন পেছনে। আমরা এখন গ্রেনাডায় আছি।’
হোল্ডস্টককে নিয়ে নিজের মন্তব্য নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে স্যামি বলেন, ‘আমি কোনো বিরক্তি পুষে রাখি না। আমি যা দেখেছি, তার ভিত্তিতে বলেছি। আমি শাস্তি পেয়েছি তার জন্য। আমি অ্যাড্রিয়ানকে শুভকামনা জানাই। আমরা সবাই মানুষ। আম্পায়ারদের বিরুদ্ধে আমার কিছুই নেই। আমি সত্যিই চাই সে একটি দারুণ ম্যাচ পরিচালনা করুক।’
অস্ট্রেলিয়া এই আম্পায়ারিং বিতর্কে তেমন জড়ায়নি। যদিও স্বীকার করেছে, বার্বাডোজে কিছু সিদ্ধান্ত তাদের পক্ষে গেছে। শাই হোপকে আউট করার সময় অ্যালেক্স কেরের মনে হয়েছিল, রিভিউতে সিদ্ধান্ত বদলে যেতে পারে।
কেরে ডাইভ দিয়ে হোপের ব্যাটের ভেতরের কানায় লাগা বলটি তালুবন্দি করেন। হোপ তখন ৪৮ রান নিয়ে খেলছিলেন। কেরের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, তিনি পরিষ্কারভাবে ক্যাচটি নিয়েছেন। পরে টিভি আম্পায়ার হোল্ডস্টক সেটিকে আউট দেন।
তবে একই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে ট্রাভিস হেডের ক্যাচ হোপ নেওয়ার পর সেটিকে নটআউট ঘোষণা করেন হোল্ডস্টোক। এই সিদ্ধান্তটি মানতে পারেননি স্যামি।
বিতর্কিত সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে কেরে বলেন, ‘আমি সঙ্গে সঙ্গেই মনে করেছিলাম, এটা আউট। তবে বড় স্ক্রিনে রিপ্লে দেখে আমার আত্মবিশ্বাস কমে যায়। এখনকার থার্ড আম্পায়ারিংয়ে কী আউট, আর কী আউট না — সেটা নিয়ে অনেক দ্বিধা দেখা যায়। আপনার মত আর আমার মত এক নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি এটা কঠিন একটা ম্যাচ ছিল, যেখানে থার্ড আম্পায়ারের সামনে পাঁচ-ছয়-সাতটা ৫০/৫০ সিদ্ধান্ত ছিল। সবাইকে খুশি রাখা সম্ভব না। কিন্তু আমি মনে করি তিনি (হোল্ডস্টক) ভালো কাজ করেছেন। অবশ্য আমরা জানি, অন্য দল কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে হতাশ ছিল — সেটাও আমি বুঝি।’
গ্রেনাডায় হোল্ডস্টক অন-ফিল্ড আম্পায়ার হিসেবে রিচার্ড কেটলবরোর সঙ্গে দাঁড়াবেন। এটি হতে যাচ্ছে আম্পায়ার হিসেবে কেটলবরোর ৯৩তম টেস্ট। এই ম্যাচের মাধ্যমে ডেভিড শেফার্ডকে ছাড়িয়ে (৯২ টেস্ট) ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ টেস্ট পরিচালনা করা আম্পায়ারের স্বীকৃতি পাবেন কেটলবরো।
এমএইচ/এমএস