আমি শিবের ভক্ত, বিষও গিলে ফেলি: মোদী

1 day ago 6

আমি শিবের ভক্ত, তাই বিষও গিলে ফেলি বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) আসামের দারাঙে এক সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কংগ্রেসের সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এই মন্তব্য করেন তিনি। মোদীর অভিযোগ, বিরোধীরা তার প্রয়াত মা হীরাবেন মোদীকে নিয়েও অশালীন মন্তব্য করেছে।

সমাবেশে মোদী বলেন, আপনি আমাকে যতই গালি দেন না কেন, আমি ভগবান শিবের ভক্ত। আমি সব বিষ গিলে ফেলি। কিন্তু যখন অন্য কাউকে অপমান করা হয়, আমি তা সহ্য করতে পারি না।

‘আমি জানি, গোটা কংগ্রেস ইকোসিস্টেম আমাকে টার্গেট করবে ও বলবে, মোদী আবার কাঁদছে। কিন্তু জনগণই আমার দেবতা। তাদের সামনে না বললে কোথায় বলব? তারাই আমার মাস্টার, দেবতা, রিমোট কন্ট্রোল। আমার অন্য কোনো রিমোট কন্ট্রোল নেই।’

সম্প্রতি বিহারে নির্বাচনী প্রচারে আরজেডি-কংগ্রেসের একটি মঞ্চ থেকে মোদী ও তার মাকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করার অভিযোগ ওঠে। যদিও কংগ্রেস দাবি করেছে, তাদের কোনো নেতা তখন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন না। এরপর কংগ্রেসের তৈরি একটি এআই ভিডিও নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়, যেখানে প্রধানমন্ত্রীর মাকে নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক উপস্থাপনা ছিল বলে দাবি করে বিজেপি।

‘রিমোট কন্ট্রোল’ প্রসঙ্গটি আগে থেকেই মোদীর রাজনীতিতে ব্যবহৃত আক্রমণাত্মক শব্দ। অতীতে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং কাজ করেছেন সংযুক্ত প্রগতিশীল জোট (ইউপিএ) চেয়ারপারসন সোনিয়া গান্ধীর নিয়ন্ত্রণে। সম্প্রতি তিনি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকেও গান্ধী পরিবারের ‘রিমোট কন্ট্রোল’ বলে অভিযুক্ত করেছেন। কংগ্রেস অবশ্য বারবার এ অভিযোগ নাকচ করেছে।

মোদী বলেন, আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা তাকে কংগ্রেস সভাপতি খাড়গের একটি মন্তব্য দেখিয়েছিলেন। ভারত সরকার যখন আসামের গর্ব ভূপেন হাজরিকাকে ভারতরত্নে ভূষিত করে, তখন খাড়গে নাকি বলেছিলেন, মোদী ‘গায়ক-নর্তকদের’ পুরস্কার দিচ্ছেন।

২০১৯ সালে খাড়গের ওই মন্তব্যে ব্যাপক বিতর্ক হয়েছিল। পরে তিনি ব্যাখ্যা দেন, ভূপেন হাজারিকা ছিলেন ভারতের অন্যতম প্রতিভাধর শিল্পী, যার সঙ্গীত, কবিতা, সাহিত্য ও সিনেমায় অসামান্য অবদান আসামের সংস্কৃতিকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরেছে।

নিজের বক্তৃতায় মোদী প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর নামও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ১৯৬২ সালের ভারত-চীন যুদ্ধের পর নেহরু স্বীকার করেছিলেন, উত্তর-পূর্ব ভারতের মানুষের ক্ষত সারেনি। মোদীর অভিযোগ, আজকের কংগ্রেস সেই ক্ষতের ওপর লবণ ছিটাচ্ছে।

আসামে উন্নয়ন প্রসঙ্গে মোদী বলেন, কংগ্রেস ছয় দশক ধরে ক্ষমতায় থেকেও ব্রহ্মপুত্রের ওপর মাত্র তিনটি সেতু নির্মাণ করেছে। বিপরীতে বিজেপি সরকার গত এক দশকে ছয়টি নতুন সেতু তৈরি করেছে। তার দাবি, জনগণ এ উন্নয়নকে মূল্যায়ন করবেন ও আশীর্বাদ দেবেন।

সন্ত্রাসবিরোধী লড়াই প্রসঙ্গে মোদী অভিযোগ করেন, কংগ্রেসের আমলে সন্ত্রাসবাদী হামলায় সরকার চুপ থাকত। এখন ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের ভেতরে ঢুকে ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরিচালনা করছে। কিন্তু কংগ্রেস পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে তাদের এজেন্ডা সামনে আনে। তার অভিযোগ, পাকিস্তানের মিথ্যাই কংগ্রেসের এজেন্ডা হয়ে দাঁড়ায়।

অনুপ্রবেশ ইস্যুতেও কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন মোদী। তার অভিযোগ, কংগ্রেসের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য ভোটব্যাংক রাজনীতি, দেশের স্বার্থ তাদের কাছে মুখ্য নয়। তিনি বলেন, কংগ্রেস এখন দেশবিরোধী ও অনুপ্রবেশকারীদের রক্ষক হয়ে উঠেছে। ক্ষমতায় থাকাকালে তারা অনুপ্রবেশকে উৎসাহ দিয়েছে; এখন তারা চায়, অনুপ্রবেশকারীরা দেশে স্থায়ীভাবে বসতি গড়ে তুলুক ও ভারতের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করুক।

সূত্র: এনডিটিভি

এসএএইচ

Read Entire Article