লাদাখকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে হওয়া আন্দোলনে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে অধিকারকর্মী সোনাম ওয়াংচুককে গ্রেফতার করেছে ভারতের পুলিশ। সোনাম ওয়াংচুক ব্যাপক জনপ্রিয় সিনেমা থ্রি ইডিয়টসে আমির খানের করা ‘ফুংসুখ ওয়াংড়ু’ চরিত্রের বাস্তব ব্যক্তি।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। এরআগে সোনাম ওয়াংচুক বলেছিলেন লাদাখের রাজ্যের মর্যাদার জন্য তিনি ‘যে কোনো সময় জেলে যেতে প্রস্তুত’।
লাদাখকে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্গত করে পূর্ণাঙ্গ স্বশাসনের আওতায় আনা ও পরবর্তী পর্যায়ে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ৩৫ দিনের জন্য অনশনে বসেছিলেন ওয়াংচুকসহ ‘লেহ অ্যাপেক্স বডি’র কয়েক জন সদস্য। ঘটনাপ্রবাহ বলছে, তার পরেই সিবিআইয়েএর নিশানা হয়েছিলেন তিনি।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে লাদাখের রাজধানী লেহ শহরে বিক্ষোভে নেমেছিলেন কয়েক হাজার তরুণ-তরুণী। অভিযোগ, বিক্ষোভ চলাকালীনই লেহতে বিজেপির পার্টি অফিসে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। শুধু তাই নয়, পার্টি অফিসের সামনে থাকা একটি পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগানো হয়। তার পরই পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সংঘর্ষে মোট পাঁচ জনের মৃত্যু হয়।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, ঘটনার জন্য সোনমের উস্কানি ‘অন্যতম কারণ’। এরপর দিনই গ্রেফতার করা হলো তাকে।
এর আগে ওয়াংচুকের অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ‘স্টুডেন্ট এডুকেশন অ্যান্ড কালচারাল মুভমেন্ট অব লাদাখ’র নিবন্ধন বাতিল করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তার প্রতিষ্ঠানটি বিদেশ থেকে অর্থ আনতো বলে অভিযোগ মন্ত্রণালয়ের।
তবে, দুদিন আগে হওয়া সংঘাতে কোনো ধরনের উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওয়াংচুক। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওয়াংচুক বলেন, তার প্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে কোনো অর্থ আনত না। তবে জাতিসংঘ, সুইস ও ইতালীয় বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে তারা বাণিজ্যিক লেনদেন করেছেন। যেগুলোর সব ট্যাক্সও তারা দিয়েছেন।
ওয়াংচুক ২০১৮ সালে রামোন মাগাসারে পুরস্কার জেতেন। ভারতের কেন্দ্র ও ইউনিয়ন অঞ্চল প্রশাসন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে, লাদাখের সাম্প্রতিক সহিংসতায় তিনি বিভিন্ন বিবৃতি দিয়ে উস্কানি দিয়েছেন।
কেন্দ্র সরকার অভিযোগ করেছে, লাদাখকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার ইস্যু নিয়ে অ্যাপেক্স বডি লেহ (এবিএল) ও কার্গিল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্সের (কেডিএ) সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করছিল। তা সত্ত্বেও ওয়াংচুক তার অনশন থেকে সরে আসেননি।
ওয়াংচুক যখন অনশন করছিলেন তখনই লাদাখে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। তবে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর ওয়াংচুক তার অনশন ভেঙে অ্যাম্বুলেন্সে করে তার গ্রামে চলে যান। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তিনি কোনো কিছু করেননি বলে বলে অভিযোগ করেছে কেন্দ্র সরকার।
সূত্র: এনডিটিভি
এসএএইচ