জুলাই-আগস্টে গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু এবং কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আওয়ামী লীগ ও মিত্র দলগুলোর গ্রেপ্তার শীর্ষ কয়েকজন নেতার সঙ্গে আমু ও কামরুলকে বিচার করতে মামলার অগ্রগতি প্রতিবেদন ও পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৮ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ওই আদেশ দেন।
ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আদালতের আদেশের বিষয়ে প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামীম বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত ১৭ অক্টোবর একটি মামলায় দু’জন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। সেখানে মোট আসামি ছিলেন ৪৫ জন। তাদের মধ্যে একজন আমির হোসেন আমু, আরেকজন হলেন কামরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আমরা ট্রাইব্যুনালে একটি দরখাস্ত দাখিল করেছি, তাদেরকে ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করার জন্য। তাদের বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ পাওয়া গেছে তা আমরা ট্রাইব্যুনালে পড়ে শুনিয়েছি। ট্রাইব্যুনাল সন্তুষ্ট হয়েছে এবং ৪ ডিসেম্বর তাদেরকে উপস্থাপন করার জন্য বলা হয়।
মামলায় এদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামীম বলেন, কামরুল ইসলাম ও আমির হোসেন আমু ১৪ দলের সমন্বয়ক থাকা অবস্থায় গত ১৯ জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের চলাকালীন গণভবন একটি মিটিং হয়। সেই মিটিং তারা নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ছিলেন। এবং সেই বৈঠকে কারফিউর নির্দেশ দেওয়া হয়, আর দেখা মাত্র গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপরই ২০ জুলাই থেকে বহু মানুষকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করা হয়। এক দায় তারা এড়াতে পারেন না। সেই মিটিংয়ে যারা উপস্থিত ছিল তারা কেউই আর দায় এড়াতে পারে না।
তিনি বলেন, কামরুল ইসলাম আওয়ামী লীগের প্রসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। প্রেসিডিয়াম সদস্য থাকা অবস্থায় তার দল ছাত্র জনতাকে দলীয় সিদ্ধান্তে হত্যার নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি তার নির্বাচনী এলাকা ঢাকা ২ আসনে বহু ছাত্র জনতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
উল্লেখ্য, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় আমির হোসেন আমু ও কামরুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগ ও মিত্র দলগুলোর গ্রেপ্তার শীর্ষ কয়েকজন নেতার বিচারিক প্রক্রিয়া চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
শীর্ষ নেতাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, দীপু মনি, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, জুনাইদ আহমেদ পলক, শাজাহান খান, গোলাম দস্তগীর গাজী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আব্দুর রাজ্জাক, আমির হোসেন আমু ও কামরুল ইসলাম।