স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) দ্রুত অনুমোদন ও বাস্তবায়নের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে সড়ক ছেড়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে আলটিমেটাম দেওয়ার পর যমুনা সেতু পশ্চিম গোল চত্বর এলাকা ত্যাগ করেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে দুপুর ১২টা থেকে যমুনা সেতু পশ্চিম মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। এতে যমুনা সেতুর উভয় সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
আন্দোলনরত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা মানুষের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে আগামী ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে আজকের মতো আন্দোলন শেষ করেছি। ১৭ আগস্ট একনেকে দাবি বাস্তবায়ন না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, পাঁচটি বিভাগে (বাংলা, সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, সংগীত ও ব্যবস্থাপনা) বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক হাজার ২০০ এর বেশি। ৩৪ জন শিক্ষক, ৫৪ কর্মকর্তা ও ১০৭ জন কর্মচারী নিয়ে শাহজাদপুর মহিলা কলেজ, সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া ডিগ্রি কলেজসহ দুটি ভাড়া বাড়িতে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। অথচ নিজস্ব ক্যাম্পাস নির্মাণে প্রকল্প বারবার জমা দিলেও তা এখনো অনুমোদন হচ্ছে না।
আরও পড়ুন:
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মিরাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৮ সালে। প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করেও কোনো ফল হয়নি। তাই আমরা দাবি আদায়ে রাজপথে নেমেছি।’
এ বিষয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এস এম হাসান তালুকদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের জন্য ৫১৯ কোটি টাকার প্রকল্প শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন হয়ে একনেকের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের তৎকালীন জমিদারির অন্তর্গত খাস জমিতেই স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ করার জন্য প্রকল্প দেওয়া হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণের ঝামেলা ও পরিবেশের কোনো ক্ষতি ছাড়াই সেখানে নান্দনিক ক্যাম্পাস নির্মাণ সম্ভব।’
উপাচার্য জানান, ৫১৯ কোটি ১৫ লাখ টাকার ডিপিপি উপস্থাপন করা হয়, যা চলতি বছরের ৭ মে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় আলোচনা হয়। পরবর্তী ১৬ জুন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সরেজমিন পরিদর্শন করেন। তবুও কাজ হচ্ছে না। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষ সংকট, আবাসন সংকট ও নিরাপত্তাহীনতাসহ নানা সমস্যায় পড়ে আন্দোলন করছেন।
যমুনা সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষার্থীরা যমুনা সেতু পশ্চিম মহাসড়ক এক ঘণ্টা অবরোধ করেছিলেন। এতে সেতুর উভয়পাশে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। পরে অনেক অনুরোধ করার পর শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে চলে গেছেন। তবে আবার ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে তারা৷
এম এ মালেক/এসআর/এমএস