অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারি খোদা বকশ চৌধুরী এবং খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদাররা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, এখন নতুন কেউ কেউ উপদেষ্টা পরিষদে কিংবা প্রধান উপদেষ্টার কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেছেন। তাদের টার্গেটই যেন পরিণত হয় আন্দোলনের স্বপক্ষে যারা ছিলেন কিংবা সহানুভূতিশীল যারা ছিলেন তারা। এই যে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের স্পিরিট, এই যে চেতনা- খোদা বকশ সাহেবরা এটাকে কি ধারণ করেন? ওটা তো তারা ধারণ করেন না। তারা বড় বড় কথা বলেন, দেখাতে চান যে- তারা অত্যন্ত নিরপেক্ষ। খোদা বকশ সাহেব, আপনি তো বিএনপির সময় আইজি ছিলেন। আপনি কী করতে পেরেছিলেন? আপনাদের কারণেই তো ১/১১ এসেছিল, অগণতান্ত্রিক শক্তি এসেছিল। উপদেষ্টা পরিষদ হওয়ার পরে আলী ইমাম মজুমদার সাহেব প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস করার জন্য ঠিক বেছে বেছে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পক্ষে যারা প্রশাসনিক লোক ছিল তাদেরকে ডিসি নিয়োগ দিলেন। পরে হয়তো এটা পরিবর্তন করেছেন নানা দিক থেকে বিতর্কিত হয়ে। কিন্তু উনি শেখ হাসিনার আমলে সাড়ে ১৫ বছর বুদ্ধির চর্চা করেন, পত্রিকায় লেখালেখি করেন। কিন্তু কখনোই কি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পক্ষে একটি আর্টিকেল লিখেছেন? আমাদের সমর্থনে কি কখনো একটি কথা লিখেছিলেন অথবা জুলাই-আগস্টে তারা কি গণতন্ত্রের পক্ষে কোনো মতামত দিয়েছেন? উনি অন্তরের মধ্যে একটি মত ধারণ করেন, সেটার প্রতিফলন আমরা দেখেছি- উনি উপদেষ্টা হওয়ার পরে।
তিনি বলেন, মূল স্পিরিটের বাহিরে কিছু কিছু উপদেষ্টার যে পদক্ষেপ এইটা আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে। এইটা গোটা জাতিকে একটা শঙ্কার মধ্যে নিয়ে গেছে। এই কারণেই আজকে সালমান এফ রহমানদের মতো লোকেরা কারাগারের ভেতর থেকে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে এবং যারা এখনো গ্রেপ্তার হননি তারা বিপুল অংকের টাকা ছিটাচ্ছেন অস্থিতিশীল করার জন্য।
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফসল। গণতান্ত্রিক যে শক্তি, সমমনা দল, তাদের সাথেই তো সম্পর্ক হওয়ার কথা ছিল এই সরকারের। আজকে কোনোভাবে যদি শেখ হাসিনার পুনরুত্থান ঘটে, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান ঘটে- অন্তর্বর্তী সরকারের কেউ যদি ভিতরে ভিতরে আওয়ামী লীগের সাথে সম্পর্ক রাখেন সেটা বাদ দিয়ে এই সরকারের বাকিরা তো রেহাই পাবেন না, আমরা কেউ রেহাই পাব না। আজকে যদি গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য না থাকে, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব থাকবে না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, আসাদুল করিম শাহীন, খন্দকার আবু আশফাক, মামুন হাসান, হাবিবুর রশিদ হাবিব, শেখ মো. শামীম, ফজলুর রহমান খোকন, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, রাশেদ ইকবাল খান প্রমুখ।