আলোচনায় তারেক রহমানের ‘ট্রাভেল পাস’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরতে চাইলে অন্তর্বর্তী সরকার থেকে একদিনেই ওয়ানটাইম পাস (ট্রাভেল পাস) দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। রোববার (৩০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলে তিনি। পররাষ্ট্র উপদেষ্টার এমন কথা নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কারণ ট্রাভেল পাসের বিষয়টি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে বর্তমানে তারেক রহমানের বাংলাদেশি পাসপোর্ট নেই। সাধারণত পাসপোর্ট না থাকলেই নাগরিকদের দেশে ফেরার জন্য এ ধরনের ট্রাভেল পাস প্রয়োজন হয়। এ নিয়ে কথা হলে সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বিবিসি বাংলাকে জানান, বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের যদি পাসপোর্ট না থাকে কিংবা পাসপোর্ট হারিয়ে ফেললে অথবা কারও জন্য যদি পাসপোর্ট ইস্যুর জন্য পর্যাপ্ত সময় না থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট দেশে থাকা বাংলাদেশ হাইকমিশন বা দূতাবাস তাকে শুধুমাত্র দেশে আসার জন্য ট্রাভেল পাস দিয়ে থাকে। এটি ওয়ান ওয়ে অর্থাৎ শুধু বাংলাদেশে আসার জন্য। দেশে আসা পর্যন্তই এ ট্রাভেল পাস ভ্যালিড থাকে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার পতনের ১৫ মাস পর এসেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কেন পাসপোর্ট পান

আলোচনায় তারেক রহমানের ‘ট্রাভেল পাস’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরতে চাইলে অন্তর্বর্তী সরকার থেকে একদিনেই ওয়ানটাইম পাস (ট্রাভেল পাস) দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। রোববার (৩০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলে তিনি।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টার এমন কথা নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কারণ ট্রাভেল পাসের বিষয়টি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে বর্তমানে তারেক রহমানের বাংলাদেশি পাসপোর্ট নেই। সাধারণত পাসপোর্ট না থাকলেই নাগরিকদের দেশে ফেরার জন্য এ ধরনের ট্রাভেল পাস প্রয়োজন হয়।

এ নিয়ে কথা হলে সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বিবিসি বাংলাকে জানান, বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের যদি পাসপোর্ট না থাকে কিংবা পাসপোর্ট হারিয়ে ফেললে অথবা কারও জন্য যদি পাসপোর্ট ইস্যুর জন্য পর্যাপ্ত সময় না থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট দেশে থাকা বাংলাদেশ হাইকমিশন বা দূতাবাস তাকে শুধুমাত্র দেশে আসার জন্য ট্রাভেল পাস দিয়ে থাকে। এটি ওয়ান ওয়ে অর্থাৎ শুধু বাংলাদেশে আসার জন্য। দেশে আসা পর্যন্তই এ ট্রাভেল পাস ভ্যালিড থাকে।

কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার পতনের ১৫ মাস পর এসেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কেন পাসপোর্ট পাননি এবং তার ট্রাভেল পাসের প্রয়োজন হচ্ছে তা অনেকের মধ্যে কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। এ বিষয়ে বিবিসি বাংলার প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তার সদিচ্ছা প্রকাশ করতে গিয়ে এভাবে বলে থাকতে পারেন। তবে আমরা মনে করি ট্রাভেল পাস বা পাসপোর্ট- কোনো কিছু নিয়েই সমস্যা হবে না। কারণ এক্ষেত্রে সরকারেরও সদিচ্ছা আছে।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বাংলাদেশের পাসপোর্ট পেয়েছেন কি না কিংবা চেয়েছেন কি না অথবা পাসপোর্ট পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো জটিলতা আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এ নেতা শুধু বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার জানা নেই।’

তারেক রহমানের পাসপোর্ট নিয়ে এর আগে ২০১৮ সালে তখনকার আওয়ামী লীগ সরকার এক বিতর্ক তোলে। এর জের ধরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ওই বছরের এপ্রিলে বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, ২০১২ সালে তারেক রহমান ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন এবং এক বছরের মধ্যেই সেটি গৃহীত হয়।

দেশে ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতা নেওয়া সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে দুর্নীতির অভিযোগে আটক হয়ে ১৮ মাস কারাগারে থাকার পর ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে মুক্তি পান তারেক রহমান। ১১ সেপ্টেম্বর লন্ডনের উদ্দেশে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঢাকা ছাড়েন তিনি। এরপর বিএনপির তরফ থেকে বরাবরই বলা হচ্ছিল যে বিদেশে তার অবস্থান চিকিৎসার জন্য।

আরও পড়ুন
তারেক রহমানের ফেরার ব্যাপারে আইনগত বাধা আছে বলে জানা নেই
তফসিলের পর আবেদন সাপেক্ষে ভোটার হতে পারবেন তারেক রহমান
তারেক রহমান ফিরতে চাইলে একদিনেই ট্রাভেল পাস দেওয়া সম্ভব

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শনিবার (২৯ নভেম্বর) জানান, দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ তার একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। এদিন সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কথা তুলে ধরে তারেক রহমান দেশে ফেরা নিয়ে বলেন, ‘সংকটকালে মায়ের স্নেহ-স্পর্শ পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা যে কোনো সন্তানের মতো আমারও রয়েছে, কিন্তু অন্য আর সবার মতো এটা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমার একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ অবারিত ও একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়।’

এ স্ট্যাটাস দেওয়ার পর বিএনপি নেতার দেশে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তার আলোচনা শুরু হয়। তখন থেকেই প্রশ্ন উঠে, তিনি কেন দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না এবং এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার নিয়ন্ত্রণ কার হাতে। এর পরদিনই পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তার জন্য ট্রাভেল পাসের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসেন।

উপদেষ্টা বলেন, ‘ট্রাভেল পাসের নিয়ম হলো যখন পাসপোর্ট থাকে না বা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে বলে তখন কেউ যদি আসতে চায় (দেশে ফিরতে চায়), তাহলে ওয়ান টাইম পাস দেওয়া হয় একবার দেশে আসার জন্য। এটাতে একদিন লাগে। কাজেই এটা উনি (তারেক রহমান) যদি আজকে বলেন যে উনি আসবেন, আগামীকাল হয়তো আমরা এটা দিলে পরশু দিন প্লেনে উঠতে পারবেন। কোনো অসুবিধা নাই। এটা আমরা দিতে পারবো।’

এদিকে, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সোমবার (১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, ‘তারেক রহমানের বাংলাদেশে আসার ব্যাপারে কোনো রকমের আইনগত বাধা আছে বলে আমার জানা নেই। যদি কোনো বাধা থেকেও থাকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো। ওনার নিরাপত্তার ব্যাপারেও আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো।’

তার দেশে ফেরার সময় নিয়ে উপদেষ্টা যোগ করেন, ‘আমি নিজে বিশ্বাস করি, কোনটা উপযুক্ত সময় সেটা ভালোভাবে নির্ধারণের ক্ষমতা ওনার রয়েছে। উনি উপযুক্ত সময়ে দেশে আসবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।’

একিউএফ/এমএস

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow