আল্লাহর নবি নুহের (আ.) দোয়া ও তার জাতির পরিণতি

3 months ago 43

সুরা নুহ কোরআনের ৭১তম সুরা। এর আয়াত সংখ্যা ২৮, রুকু সংখ্যা ২। সুরা নুহ মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এ সুরাটিতে আল্লাহর নবি হজরত নুহ (আ.) ও তার সম্প্রদায়ের কথা বর্ণিত আছে। নবি নুহের (আ.) দাওয়াত, দীর্ঘকাল দাওয়াত দেওয়ার পরও তার জাতির দীন বিমুখ থাকা, নবি নুহের (আ.) দোয়া, আল্লাহর শাস্তি নেমে আসা ইত্যাদি এ সুরার আলোচ্যবিষয়।

আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কী জীবনের প্রাথমিক পর্যায়ে এ সুরাটি নাজিল হয়।

সুরা নুহের ১-২০ আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, কীভাবে তিনি তার জাতিকে দীনের দাওয়াত দিয়েছিলেন। দীর্ঘ কাল ধরে কীভাবে তিনি সব রকম প্রচেষ্টা ব্যয় করেছেন তাদের হেদায়াতের পথে আনতে। কিন্তু তার জাতি যখন কিছুতেই তার দাওয়াতে সাড়া দিল না, তখন নবি নুহ (আ.) তার জাতির কাফেরদের ধ্বংস চেয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন। সেই ঘটনা বর্ণিত হয়েছে সুরা নুহের ২১-২৮ আয়াতে।

আল্লাহ তাআলা বলেন, “নুহ বললো, হে আমার রব, আমার সম্প্রদায় আমাকে অমান্য করেছে আর অনুসরণ করছে এমন লোককে, যার ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কেবল তার ক্ষতিই বৃদ্ধি করছে। আর তারা ভয়ানক চক্রান্ত করছে। তারা বলছে, তোমরা তোমাদের উপাস্যদেরকে ত্যাগ করো না এবং ত্যাগ করো না ওয়াদ, সূয়া, ইয়াগুছ, ইয়াউক ও নসরকে। তারা অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে। অতএব আপনি জালেমদের পথভ্রষ্টতাই বাড়িয়ে দিন।

তাদের গোনাহসমূহের কারণে তাদেরকে ডুবিয়ে দেওয়া হলো, তারপর দাখিল করা হলো জাহান্নামে। তারা আল্লাহ তাআলা ছাড়া কাউকে সাহায্যকারী হিসেবে পায়নি।

নুহ আরও বললেন, হে আমার রব, আপনি পৃথিবীতে কোন কাফেরকে রেহাই দেবেন না। যদি আপনি তাদেরকে রেহাই দেন, তবে তারা আপনার বান্দাদেরকে পথভ্রষ্ট করবে এবং জন্ম দিতে থাকবে কেবল পাপাচারী, কাফের।

হে আমার রব! আপনি আমাকে, আমার বাবা-মাকে , যারা মুমিন হয়ে আমার ঘরে প্রবেশ করে-তাদেরকে এবং মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে ক্ষমা করুন এবং জালেমদের কেবল ধ্বংসই বাড়িয়ে দিন।”

এ আয়াতগুলো থেকে যে শিক্ষা ও নির্দেশনা আমরা পাই:

১. সাধারণ অবস্থায় আল্লাহর কাছে কাফের ও পাপাচারীদের হেদায়াত প্রার্থনা করা উচিত। কিন্তু কোনো জালিম ব্যক্তি বা সম্প্রদায় যখন সীমালঙ্ঘন করে, তাদের হেদায়াত পাওয়ার কোনো আশা বাকি না থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহর কাছে বদদোয়াও করা যেতে পারে।

২. দরিদ্র ও নিম্নশ্রেণীর অনেক মানুষের পথভ্রষ্ট থাকার কারণ হলো তারা সমাজের নেতৃস্থানীয় ও প্রভাবশালীদের অনুসরণ করে। নিজেরা চিন্তা-ভাবনা করে না। প্রত্যেকেরই কর্তব্য আল্লাহর দেওয়া চিন্তাশক্তি ও বিবেককে কাজে লাগানো। প্রত্যেকের পথভ্রষ্টতার দায়ভার ও শাস্তি তাকেই ভোগ করতে হবে।

৩. কাফের ও পাপাচারীরা কবরেও শাস্তি ভোগ করবে। নবি নুহের (আ.) জাতির কথা আল্লাহ বলছেন যে, তারা ডুবে মারা যাওয়ার পর আগুনে গিয়ে পড়েছে।

৪. আল্লাহর কাছে দোয়া করার সময় প্রথম নিজের জন্য দোয়া করা উচিত। তারপর নিজের পরিবার-পরিজন, বাবা-মা, সন্তান-সন্ততিসহ সব মুসলমানদের জন্য দোয়া করবে।

ওএফএফ/এমএস

Read Entire Article