ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষের পর শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। রোববার (৪ আগস্ট) রাত পর্যন্ত শহরের বেশ কয়েকটি স্থানে অবস্থান নেয় ছাত্র-জনতা।
এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষে আশুগঞ্জ থানা ও সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোলপ্লাজার পুলিশ ক্যাম্প ঘেরাও করতে গেলে ২০ পুলিশ, দুই সাংবাদিকসহ অন্তত ১২০ জন আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের বিরাসার মোড়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জমায়েত হন। তাদের সমর্থন জানিয়ে বিরাসারসহ কয়েকটি গ্রামের লোকজন অংশগ্রহণ করেন। এই খবর পেয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অন্তত ৩০-৪০টি মোটরসাইকেলযোগে সেখানে যান। ছাত্রলীগ বিরাসার গেলে শিক্ষার্থী ও জনতা তাদের ধাওয়া করেন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। বিক্ষুব্ধরা ছাত্রলীগের ২০টি মোটরসাইকেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে ত্রিমুখী সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এই সংঘর্ষে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেনসহ ৩৫ জন আহত হয়েছেন।
পরে শিক্ষার্থীদের ধাওয়ায় পিছু হটেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। দুপুরের পর শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়কে ঢুকে হালদার পাড়াস্থ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা করেন। শহরে টিএ রোডে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে ও মৌলভীপাড়ায় ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এদিকে দুপুরের পর আশুগঞ্জ থানা ঘেরাও করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। থানার প্রধান ফটকের গেইট বন্ধ থাকায় দেওয়াল টপকে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেন। এছাড়া মেঘনা নদীর সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোলপ্লাজার পুলিশ ক্যাম্প ঘেরাও করেন ছাত্র-জনতা। এসময় ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় ৫ পুলিশসহ আহত হয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, শহর এখন থমথমে। আন্দোলনকারীরা শহরে মিছিল করছে। আশুগঞ্জে থানায় ঢুকতে পারেনি, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছে।
আবুল হাসনাত মো. রাফি/এফএ/এমএস