ঢাকার শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় স্ট্যান্ডে চাঁদার দাবিতে লোড-আনলোড শ্রমিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৩ শ্রমিক। আহতদের উদ্ধার করে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) আশুলিয়া থানার এসআই মো. আনোয়ার হোসেন হামলা ও আহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে আশুলিয়ার বলিভদ্র বাজার বাসস্ট্যান্ডে হামলার এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- লোডা-আনলোড শ্রমিক সফিকুর রহমান, ইসমাঈল শেখ (৪৭), নূরুল ইসলাম, নাসির, আইয়ুব আলী, শফিক, জুয়েল, রফিক, শরিফ, লালন সরদার, আল আমিন, আলিম এবং আতর আলী। আহতদের মধ্যে ৬ জনকে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে এবং বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
কাঁচামালের লোড-আনলোডের লেবার সর্দার বাবুল মিয়া জানান, আশুলিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুল গফুরের ভাগ্নে পরিচয় দিয়ে সমির নামের এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে মাসে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। এর আগে বেশ কয়েক দিন হামলা চালিয়েছে। লেবাররা সবাই দৌড়ে পালিয়ে গিয়ে রক্ষা পায়। ভয়ে থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি।
এ ছাড়া তিনি বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সমিরের নেতৃত্বে সজল, সোলেমান, রেজাউলসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪০ থেকে ৫০ জন তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং কুপিয়ে ও পিটিয়ে তাদের প্রায় ১৩-১৪ শ্রমিককে আহত করে। এদের মধ্যে ছয়জনকে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে এবং বাকি সাতজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ সময় হামলাকারীরা শ্রমিকদের বিল বাবদ রাখা প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে আশুলিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুল গফুর জানান, সমির নামে তার কোনো ভাগ্নে বা কোনো আত্মীয়-স্বজন নেই। এটা সম্পূর্ণ গুজব।
ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাওন বড়ুয়া জানান, এখানে ছয়জনকে আহত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছে। কারো পায়ে কোপের দাগ রয়েছে, কারো জয়েন্টে মারাত্মক ও কম জখম রয়েছে। চিকিৎসা চলছে। তিনজনের অবস্থা গুরুতর। পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে, প্রয়োজন হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠাব।
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন জানান, মূলত বলিভদ্র স্ট্যান্ড দখল-বেদখল নিয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। শ্রমিকদের মারধর করে উঠিয়ে দিয়ে হামলাকারীরা দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছে। হামলায় বেশ কয়েকজন আহতও আছে। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।