মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের চরগোবিন্দপুরের আশ্রয়ণ প্রকল্পের (গুচ্ছগ্রাম) ৪০টি ঘর দরপত্র ছাড়াই পানির দামে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় তিন প্রভাবশালী ব্যক্তির চাপে পড়ে বাধ্য হয়ে হতদরিদ্র পরিবারগুলো এসব ঘর বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকালে ঘরগুলো অপসারণ কার্যক্রম শুরু হয়। ঘর বিক্রি করে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে অসহায় পরিবারগুলো।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালে সরকারের পক্ষ থেকে খোয়াজপুর ইউনিয়নের চরগোবিন্দপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের (গুচ্ছগ্রাম) নির্মাণ কাজ শুরু হয়। লোহার অ্যাঙ্গেলের কাঠামোর ওপর টিনের ছাউনি ও বেড়া দিয়ে তৈরি করা হয় ঘরগুলো। চারপাশের ভিত্তি পাকা ও মেঝে ছিল মাটির। তবে দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় ঘরগুলো বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তাই সেখানে নতুন করে ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেয় জেলা প্রশাসন। এরইমধ্যে নতুন ঘর নির্মাণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এ সুযোগে অসহায় মানুষদের চাপ প্রয়োগ করে পানির দরে ঘরগুলো বিক্রি করতে বাধ্য করেন খোঁয়াজপুর ইউনিয়নের আজিজুল আকন, নজরুল সরদার ও জাকির হোসেন নামে স্থানীয় প্রভাবশালী তিন ব্যক্তি। ৪০টি ঘর মাত্র তিন লাখ টাকায় তারা কিনে নেন। হাতেগোনা কয়েকজন তিন হাজার ৭৫০ টাকা করে পেলেও বাকিরা টাকা পাননি। আবার অনেকে ঘর বিক্রির বিষয়টি জানেন না।
নাম না প্রকাশে একজন ভুক্তভোগী বলেন, ‘আজিজুল আকন, নজরুল সরদার ও জাকির হোসেন আমাদের ঘর বিক্রি করতে বাধ্য করেছেন। আমরা ঘর বিক্রি করতে চাইনি। এই ঘর সরকারের, যা করার সরকারের পক্ষ থেকেই করবে। তাছাড়া ওরা কয়েকজনকে অল্প কিছু টাকা দিলেও বেশি ভাগই ঘর বিক্রির টাকা পাননি। সকাল থেকে ঘরগুলো খুলে নেওয়া হচ্ছে। এতে আমরা গৃহহীন হয়ে পড়েছি।’
জানতে চাইলে অভিযুক্ত নজরুল সরদার বলেন, ‘যারা এখন অভিযোগ করছেন তারা ঠিক বলেননি। সবার সম্মতিতেই ঘরগুলো কেনা হয়েছে। কেনার পর ঘরগুলো অপসারণ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেও আজিজুল আকন ও জাকির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা শাবাব বলেন, ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এসআর/জিকেএস