আসল-নকল স্মার্টওয়াচ চিনবেন যেভাবে

12 hours ago 6

স্মার্ট গ্যাজেট এখন সবার নিত্যসঙ্গী। সেটি হোক স্মার্টফোন কিংবা স্মার্টওয়াচ। কেনার সময় নানান খুঁটিনাটি দেখে নেন। এরপর দেখা যায় অনেককিছু না বোঝার কারণে নকল স্মার্টওয়াচ কিনে আনেন অনেকে। শখে কেনা স্মার্টওয়াচ বেশিদিন ব্যবহার তো করতেই পারেন না, অন্যদিকে টাকাগুলোও জলে যায়।

কিছু সহজ কৌশল জানলে আপনি সহজেই বুঝে নিতে পারবেন স্মার্টওয়াচটি আসল নাকি নকল। আসুন জেনে নেওয়া যাক-

১. প্যাকেজিং পরীক্ষা

নকল পণ্যে সবচেয়ে সহজেই পাওয়া যায় প্যাকেজিংয়ে ত্রুটি। আসল ব্র্যান্ডের প্যাকেট সাধারণত শক্ত, সুদৃঢ় কার্টন এবং পরিষ্কার প্রিন্ট। লোগো-রং/টাইপোগ্রাফি নির্ভুল থাকে। ইউনিটরের সিরিয়াল নম্বর, আইএমই/আইডি (যদি থাকে), মডেল নম্বর এবং বারকোড স্পষ্টভাবে লেবেলে মুদ্রিত। বক্সের ভেতরে ছোট অর্গানাইজড প্যাকিং-চার্জার, স্ট্র্যাপ, ইউজার ম্যানুয়াল, ওয়ারেন্টি কার্ড থাকে। নকল প্রোডাক্টে ম্যানুয়াল কাগজ পাতলা, ছাপ ঝাপসা বা ইংরেজি/অনুবাদে ভুল থাকে।

২. নির্মাণগত গুণমান

ওজন: অনেক ক্ষেত্রে নকল ঘড়ি খুব হালকা (সস্তা মেটাল/প্লাস্টিক) হয়। তবে খুব হালকা মানেই সবসময় নকল না কিন্তু খুব অপ্রাকৃতিক হালকোটাকে সন্দেহ করবেন।

ফিনিশিং: বাটন-গ্যাপ, ক্রিস্টাল/স্ক্রিন এজ, স্ট্র্যাপের সেলাই সব মিলিয়ে যত্নশীল কাজ থাকা উচিত। কাঁচে বা বেজেলে বুদবুদ বা অসমানতা থাকলে সতর্ক হন।

স্ট্র্যাপ/ক্লাস্প: আসল ব্র্যান্ড সাধারণত মানসম্মত লেদার/সিলিকন/মেটাল ব্যবহার করে; নকল স্ট্র্যাপে চটচটে গন্ধ, সহজ ফেটে যাওয়া বা রং উঠে যায় দ্রুত।

৩. সফটওয়্যার ও ইন্টারফেস পরীক্ষা করুন
স্মার্টওয়াচের ‘আসল’ চিনতে সফটওয়্যার গুরুত্বপূর্ণ। ব্র্যান্ডের অফিসিয়াল অ্যাপ। ফোনে ঘড়ি পেয়ার করলে অ্যাপের নাম, ডেভেলপার (প্রোডাক্ট ব্র্যান্ড) এবং রেটিং দেখুন। নকল ঘড়ি অনেক সময় তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ ব্যবহার করে বা অ্যাপের নাম ভিন্ন থাকে।

ফার্মওয়্যার আপডেট: অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা অ্যাপে ফার্মওয়্যার আপডেট ফিচার আছে কি দেখুন; নকল ঘড়ির ক্ষেত্রে এই সুবিধা অনুপস্থিত হয়।

৪. সেন্সর ও ফিচার যাচাই
প্রচারিত যে ফিচারগুলো হৃদস্পন্দন, SpO2, ইসিজি, জিপিএস-সেগুলো সত্যিই কাজ করে কী না। হার্টরেট: স্থির বসে এবং হাঁটার সময় রিডিং নিন; বড় ওঠানামা হলে সন্দেহ করতে হবে। জিপিএস: বাইরে বের হয়ে রুট ট্র্যাক করুন; GPS সঠিক অবস্থান দেখাতে না পারলে হয়ত নকল বা সস্তা চিপ। কল/মাইক্রোফোন ও স্পিকার: কল করলে শুনতে কেমনরূপসঙ্কেত/ড্রপ থাকলে সেটি পরীক্ষা করুন। এছাড়া একটি নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা হলো ঘড়িটিকে অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট/সার্ভিসে রেজিস্টার করার চেষ্টা করুন; যদি সিরিয়াল বা আইডি নথিভুক্ত না হয়, সন্দেহ বাড়ে।

৫. ব্যাটারি ও পারফরম্যান্স
সংস্থা যেমনটি বলেছে ব্যাটারি লাইফ বাস্তবে মিলছে কি না খেয়াল করুন। নকল ঘড়ি সাধারণত ব্যাটারি ডিক্লেয়ারেশনের উপাত্ত মেনে চলে না। সেইসঙ্গে চার্জিং পোর্ট ও কেবল পরীক্ষা করুন। অরিজিনাল চার্জার মাগ্নেটিক বা বিশেষ কনেক্টর দেয়; নকল ঘড়ির চার্জার তাল মিলবে না বা অলৌকিকভাবে ধীরে চার্জ নেবে।

৬. দাম ও কেনার উৎস
অতিরিক্ত ছাড় বা ডিস্কাউন্ট দেখে কোনো ওয়েবসাইট থেকে না কেনাই ভালো। অফিসিয়াল স্টোর/অথরাইজড রিটেইলার থেকে কিনুন। অনলাইনে বিক্রি করলে বিক্রেতার রিভিউ ও রেটিং দেখুন। অফিসিয়াল ওয়ারেন্টি কার্ড এবং লোকাল সার্ভিস সাপোর্ট থাকা জরুরি।

৭) ওয়ারেন্টি, সাপোর্ট ও সেরিয়াল যাচাই করুন
আসল ব্র্যান্ড সাধারণত আন্তর্জাতিক/লোকাল ওয়ারেন্টি দেয়। ওয়ারেন্টি কার্ড, ইনভয়েস ও সাপোর্ট কন্টাক্ট চেক করুন।সিরিয়াল নম্বর ব্র্যান্ডের সাইটে যাচাই করে দেখতে পারবেন। অনেক প্রতিষ্ঠান ওয়েবপেজে “সিরিয়াল ভেরিফাই” ফিচার রাখে।

আরও পড়ুন
স্মার্টওয়াচে কেন নিজের ছবি বসাচ্ছেন ব্যবহারকারীরা? 
একবার চার্জে ৩৩ দিন চলবে এই স্মার্টওয়াচ 

কেএসকে/জিকেএস

Read Entire Article