বিদ্রোহীদের ঝটিকা অভিযানে সিরিয়ার স্বৈরাশাসক বাশার আল আসাদের পতন হয়েছে। তার পতনের পর দ্রুত বদলে যাচ্ছে দেশটির পরিস্থিতি। এখনও নতুন সরকার গঠন না হলেও দেশটির প্রশাসনিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে বিদ্রোহীদের জোটের প্রধান শরিক হায়াত তাহরির আল–শামের (এইচটিএস) হাতে।
এ গোষ্ঠীটির প্রধান আহমেদ আল-শারা (তিনি আল-জুলানি নামেও পরিচিত) একটি বিবৃতি জারি করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, যুদ্ধাপরাধে জড়িত ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদ সরকারের সিনিয়র সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি যারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন তাদেরও ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
জুলানি বলেন, সিরিয়ার জনগণকে নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত অপরাধী, খুনি নিরাপত্তা এবং সেনা কর্মকর্তাদের জবাবদিহি করতে দ্বিধা করব না। ক্ষমতার অপব্যবহারের সঙ্গে জড়িতদের তথ্য দিন। যারা অপরাধীদের ধরতে তথ্য দেবেন তাদের পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, যারা বাধ্যতামূলক চাকরিতে ছিলেন এবং যাদের হাত সিরিয়ার জনগণের রক্তে রঞ্জিত নয়; তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমার প্রস্তাবটি বহাল রয়েছে।
প্রসঙ্গত, দুই দশকের বেশি সময় পর মাত্র ১২ দিনে নাটকীয়ভাবে সিরিয়ার স্বৈরাশাসক বাশার আল আসাদের পতন হয়েছে। তার পতনের পর নতুন দিনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন সিরিয়ার নাগরিকরা। এরইমধ্যে দেশটির শরণার্থীদের নিরাপদে দেশে ফেরাতে নতুন ঘোষণা দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। সোমবার (০৯ ডিসেম্বর) সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এরদোয়ান বলেন, সিরিয়ার সঙ্গে দক্ষিণের সীমান্তবর্তী গেট খুলে দেবে তুরস্ক। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদের পলায়নের পর লাখ লাখ শরণার্থীর নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তনের সুযোগ দিতে এ পদক্ষেপের ঘোষণা দেন তিনি।
রাজধানী আংকারায় মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে তিনি বলেন, সিরিয়াকে পুনর্গঠনে যে কোনো ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত তুরস্ক। দেশটিতে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর রাজধানী দামেস্ক দখলের মাধ্যমে ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসান হয়েছে। বর্তমানে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ রাশিয়ার পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। তার এ পতনকে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে বড় ধরনের পটপরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।