সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের পতন ইরানের জন্য একটি বড় আঘাত। এখন তাদের লেবানন অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের পথ আর থাকবে না। লেবাননে নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিজবুল্লাহর কাছে স্থলপথে পৌঁছানোর সুযোগ পাবে না ইরান। এতে হামাসের মতো ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিবিসি ও আল আরাবিয়ার কয়েকটি প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাশারের নেতৃত্বাধীন সরকার নিজেদের প্রতিরোধের অক্ষের (অ্যাক্সিস অব রেজিস্ট্যান্স) অংশ হিসেবে উপস্থাপন করত। এতে সিরিয়ার দিক থেকে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো সমর্থন পেত। এখন আর তা তারা পাবে না। ফলে এ ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই প্রবলভাবে খুশি ইরানের চিরশত্রু ইসরায়েল। নেতানিয়াহুর ভিডিওবার্তায় তা প্রকাশিতও হয়েছে। প্রথম থেকেই ইসরায়েল সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সহায়তা দিয়ে আসছিল। ইসরায়েলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বিদ্রোহীরাও।
চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম কান ব্রডকাস্টারকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন বিদ্রোহীদের এক মুখপাত্র। সেখানে ইসরায়েলের ভূয়সী প্রশংসা করে ওই মুখপাত্র বলেছিলেন, ‘আমরা ইসরায়েলকে ভালোবাসি এবং আমরা কখনো দেশটিকে শত্রু মনে করিনি। আমরা আপনাদের ঘৃণা করি না; বরং ভালোবাসি এবং অনেক ভালোবাসি।’ তার এ মন্তব্যের পর যেন চোখে অন্ধকার দেখছে ইরান।
এদিকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ পতনের পর বিদ্রোহী জোটের নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি রোববার (৮ ডিসেম্বর) রাতে দামেস্কের ঐতিহাসিক উমাইয়া মসজিদে দাঁড়িয়ে তার প্রথম বিজয়ী বক্তব্য দেন। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদন থেকে এ বিজয়ী বক্তব্যের কথা জানা যায়।
বিজয়ী বক্তব্যে আল-জোলানি সিরিয়ার নতুন যুগের সূচনার কথা বলেন এবং ইরান ও রাশিয়াকে কঠোর হুঁশিয়ারি দেন।
আল-জোলানি বলেন, এখন থেকে সিরিয়ার ভূখণ্ড ইরান ও রাশিয়ার স্বার্থ পূরণের মঞ্চ নয়, বরং এটি একটি স্বাধীন এবং বহিরাগত শক্তির প্রভাবমুক্ত দেশ হবে।
তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন যে, সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ইরান ও রাশিয়ার হস্তক্ষেপ তিনি বরদাশত করবেন না। পাশাপাশি, তিনি লেবাননে ইরানের মিত্র হিজবুল্লাহর সিরীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ বন্ধ করার ইঙ্গিত দেন।