আসামি গ্রেপ্তার না হলে পুলিশ কার্যালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণা

1 hour ago 4

রংপুরের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাদলকে মারধর, হেনস্তা ও ক্ষমা চাইতে জোরাজুরি করার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হলে মহানগর পুলিশ কার্যালয় ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছেন রংপুরের সাংবাদিক সমাজ। 

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুর প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এতে সাংবাদিকদের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের নেতা ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন।

রংপুর সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে এ মানববন্ধনে রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন (আরপিইউজে), রংপুর প্রেস ক্লাব, রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাব, সিটি প্রেস ক্লাব, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, টেলিভিশন ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা অংশ নেন। এ ছাড়াও এনসিপি নেতা আলমগীর নয়ন, জাতীয় শ্রমিক পার্টির শ্যামল বর্মন, এবি পার্টির নেতা রুজু হোসেনসহ অন্য রাজনৈতিক নেতারাও সংহতি জানান।

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘জুলাই যোদ্ধা’ ও ‘জুলাই রাজবন্দি’ কোটায় রংপুর সিটি করপোরেশনে গোপনে ৬০০ জনের অটোরিকশার লাইসেন্স আবেদনের সংবাদ প্রকাশ করায় লাইসেন্স বিতরণ বন্ধ হয়ে যায়। আর এতে ক্ষুব্ধ একটি চক্র অস্ত্রের মুখে তাকে তুলে নিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায় এবং জোরপূর্বক ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার চেষ্টা করে। এ ঘটনা কেবল একজন সাংবাদিকের ওপর হামলা নয়; এটি স্বাধীন সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে প্রকাশ্য যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। 

তারা আরও বলেন, সাংবাদিকদের কণ্ঠ রোধ করার অপচেষ্টা দেশের গণতান্ত্রিক চর্চা ও মুক্ত চিন্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। বিশেষ করে ‘জুলাই স্পিরিট’-এর যে চেতনায় মানুষ দুর্নীতি, অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, সেই চেতনাকে স্তব্ধ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রই হচ্ছে এ হামলার মূল লক্ষ্য।

পরে আরপিইউজে সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেক কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টার মধ্যে জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং প্রধান নির্বাহী উম্মে ফাতেমা এবং ট্রেড লাইসেন্স শাখার প্রধান মিজানুর রহমান মিজুসহ মব সৃষ্টি করে হেনস্তাকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপসারণ করা না হলে বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পুলিশ কমিশনার অফিস ঘেরাও করা হবে। এ ছাড়াও সিটি করপোরেশনের ইতিবাচক সব সংবাদ পরিবেশন বন্ধ রেখে দুর্নীতি ও অনিয়মের সংবাদ প্রচার-প্রকাশের কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি।

সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাদল বলেন, আমার ওপর হামলা পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। আমাকে তুলে এনে পঙ্গু করে দিতে পারলে আমি আর কোনো প্রতিবেদন করতে পারব না- এজন্যই এ হামলা। আমি যদি কোনো ভুল সংবাদ প্রকাশ করে থাকি, আইনিভাবে বিচার হোক। কিন্তু যারা আমাকে অন্যায়ভাবে তুলে নিয়ে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

উল্লেখ্য, রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর কাচারীবাজার থেকে বাদলকে তুলে নিয়ে মারধর করা হয়। তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও একটি দৈনিক পত্রিকার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক। এরপর দুপুরে সাংবাদিকরা নগর ভবনের সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচি করলে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সাংবাদিকদের ওপর আবারও হামলা চালান।

Read Entire Article