দুর্নীতি, শিক্ষক নির্যাতন ও এক প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের প্রতিবাদে বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফজলে এলাহীকে প্রত্যাহারের দাবিতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন উপজেলার শিক্ষক ও কর্মচারীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন ছাত্র-জনতা ও রাজনৈতিক দলের নেতারা। এতে শহরে যানচলাচল বন্ধ হয়ে আটকা পড়ে শত শত যানবাহন।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় বীরগঞ্জ উপজেলার শিক্ষক পরিবার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির আয়োজনে এই আন্দোলন শুরু হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এস এস হাবিবুর হাসান। তিনি আন্দোলনকারী শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। পরে বেলা ২টায় অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন তারা। অবরোধ তুলে নেওয়ার পর যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
আজ সকালে ইউএনওকে প্রত্যারের দাবিতে মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীরা উপজেলা পরিষদ চত্বরে এলে পুলিশ বাধা দেয়। বাধা অতিক্রম করেও তার উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন করেন। শেষে উপজেলা পরিষদের সামনে দিনাজপুর-পঞ্চগড় সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় সেখানে আরও পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্য অবস্থান নেন।
সমিতির আহ্বায়ক কবি নজরুল ইসলাম উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ইউএনও মো. ফজলে এলাহী যোগদানের পর থেকে ব্যাপক অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, অসহনীয় ঘুষ দুর্নীতি এবং সব স্কুলপ্রধানের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে আসছেন। তিনি শিক্ষক-কর্মচারীদের ওপর অত্যাচার করেন। ক্ষমতার দম্ভে তিনি শিক্ষকদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন। কথায় কথায় গালমন্দ করেন। কোনো প্রকার কারণ ছাড়াই অহেতুক শিক্ষক-কর্মচারীর বিল বেতনে স্বাক্ষর না করে কালক্ষেপণসহ দেরিতে বিল দেন। বীরগঞ্জের ইতিহাসে এর আগে কোনো ইউএনও এ ধরনের খারাপ আচরণ ও ঘুষ-দুর্নীতি করেননি।
তারা আরও বলেন, ইউএনও নিয়মবহির্ভূত ও একক ক্ষমতাবলে চৌধুরী হাট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুর রহমান খানকে বিধিবহির্ভূত সাময়িক বরখাস্ত করেছেন। কবিরাজ হাট আদর্শ উচ্চবালিকা বিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিদ্যালয়ে টাকার বিনিময়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করেছেন। বিভিন্ন কারণে বীরগঞ্জ উপজেলায় শিক্ষাঙ্গনে চলছে চরম অসন্তোষ ও বিশৃঙ্খলা। তাই অতিষ্ঠ সব শিক্ষক-কর্মচারীসহ সাধারণ জনগণ এই ইউএনওকে দ্রুত প্রত্যাহার করা না হলে আমরা রাজপথ ছাড়বো না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক কবি নজরুল ইসলাম উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম জানান, ইউএনওকে প্রত্যাহারের আশ্বাসে আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে এবং সড়ক অবরোধ তুলে নেওয়া হয়েছে।
দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এস এস হাবিবুর হাসান জানান, বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।