ইউক্রেনের জন্য ক্ষেপণাস্ত্র পাঠালো ইসরায়েল

2 hours ago 6

ইসরায়েল থেকে প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের জন্য প্রায় ৯০টি ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্র পোল্যান্ডে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে এগুলো ইউক্রেনে পাঠানো হবে বলে জানা গেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনটি সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে।

ইউক্রেনের অনুরোধ ও রাশিয়ার হুঁশিয়ারি 

২০২৪ সালে কিয়েভ ইসরায়েলের কাছে এ ক্ষেপণাস্ত্র চেয়েছিল। তবে মস্কো তখন ইসরায়েলকে এ ধরনের পদক্ষেপের সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করেছিল। দীর্ঘদিন এ বিষয়ে নিশ্চুপ থাকলেও চলতি সপ্তাহে মার্কিন সি-১৭ পরিবহন বিমানের মাধ্যমে দক্ষিণ ইসরায়েলের একটি বিমানঘাঁটি থেকে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো পোল্যান্ডের রেজেসজো শহরে নিয়ে যাওয়া হয়।

ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইসরায়েল মস্কোকে এ পদক্ষেপ সম্পর্কে অবগত করেছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, অস্ত্রগুলো ইউক্রেনকে সরবরাহ করা হয়নি, বরং যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

মার্কিন ও রুশ প্রতিক্রিয়া 

পেন্টাগন এবং মার্কিন ইউরোপীয় কমান্ড এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। এদিকে, রাশিয়াও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে রুশ কর্মকর্তারা ইতোপূর্বে ইসরায়েলকে সতর্ক করেছিলেন যে, ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানোর পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে।

নেতানিয়াহু ও জেলেনস্কির রাজনৈতিক টানাপোড়েন 

অ্যাক্সিওসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির ফোন ধরতে রাজি হননি। তবে সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে পরিস্থিতি বদলে যায়।

একজন ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হাসিডিক ইহুদি তীর্থযাত্রীদের কিয়েভের দক্ষিণে উমানে যাওয়ার জন্য জেলেনস্কির অনুমতি প্রয়োজন ছিল। সেখানে ইহুদি আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ব্রাটস্লাভের রেব নাচম্যানের সমাধি রয়েছে। নেতানিয়াহু প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র স্থানান্তরের অনুমোদন না দেওয়া পর্যন্ত জেলেনস্কি ইহুদি তীর্থযাত্রীদের প্রবেশের অনুমতি দেননি।

ইসরায়েলের পরিবর্তিত অবস্থান 

ইসরায়েল এতদিন ধরে রাশিয়ার প্রতিশোধের আশঙ্কা ও ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ার ভয়ে কিয়েভকে শুধু মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছিল। তবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত বাড়ার পর থেকে ইউক্রেনকে এ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ ইসরায়েলের ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ’ অবদান হিসেবে দেখা হচ্ছে।

রাশিয়ার সতর্কবার্তা ও ভূরাজনৈতিক প্রভাব 

জাতিসংঘে রাশিয়ার দূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া গত বছর ইসরায়েলকে ‘কিয়েভে অস্ত্র পাঠানোর পরিণতি’ সম্পর্কে সতর্ক করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ইউক্রেনে পাঠানো যে কোনো অস্ত্র শেষ পর্যন্ত ধ্বংস হয়ে যাবে।

সিরিয়ায় ইসরায়েলের তৎপরতা ও রাশিয়ার অবস্থান 

গত ডিসেম্বরে সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের হামলার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকার পতনের মুখে পড়ে এবং মস্কো সেখানে সামরিক উপস্থিতি কমিয়ে আনে। এ সুযোগে ইসরায়েল সিরিয়ার বেশিরভাগ সামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করে ও গোলান মালভূমির অতিরিক্ত অঞ্চল দখল করে নেয়।

এরপর চলতি মাসের শুরুর দিকে রাশিয়া ও ইরান ‘কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ চুক্তি সই করে, যা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে। ইউক্রেনে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের বিষয়টি রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া কেমন হবে, তা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে।

Read Entire Article